মাস্টারদা সূর্যসেনের ১২৮তম জন্মদিন আজ

0 220

ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতাসংগ্রামী মাস্টারদা সূর্যসেনের ১২৮তম জন্মদিনে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করছেন তার জন্মভূমি রাউজানের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ রাউজানের নোয়াপাড়া গ্রামে জন্ম নেয়া এই মহান বিপ্লবীর আবক্ষ মূর্তিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে মাস্টারদা সূর্যসেন স্মৃতি পাঠাগার, রাজনৈতিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।

আজ সোমবার ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় রাউজান উপজেলা সদরের সূর্যসেন চত্বরে মাস্টার দা সূর্যসেন স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এসময় মাস্টার দা সূর্যসেন স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত সহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ, রাউজান কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন পৃথক পৃথকভাবে বাঙালির সংগ্রামী চেতনার বাতিঘর মাস্টারদা’র আবক্ষ মূর্তিতে প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, রাউজান পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ, রাউজান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিম নাওয়াজ চৌধুরী, যুবলীগ নেতা সাবের হোসেন, আবু ছালেক, কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আসিফ, সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজানের সভাপতি মো. সাইদুল ইসলাম প্রমূখ।

সূর্যসেন পাঠাগারের সামনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বক্তারা বলেন, মাস্টার দা সূর্যসেন পরাধীনতা থেকে দেশকে মুক্ত ও স্বাধীন করার সংগ্রামে আত্মোৎসর্গকারী, দেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মাস্টারদা সূর্যসেন। স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীতে স্বাধীনতাকামী মাস্টারদা’র জন্মদিন উদযাপন করছি।

চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও কলকাতার বহরমপুর কলেজ থেকে বি.এ পাশ করার পর বিপ্লবী দলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বাড়ে। স্নাতক পাশ করে তিনি নিজ গ্রামে ফিরে উমাতারা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনেও যোগ দিয়েছিলেন সূর্যসেন। নিজের বিপ্লবী দলের জন্য অর্থ ও অস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তিনি বাংলাদেশ ও কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরেছেন।

‘১৯৩০ সালে চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার দখলের মতো ঐতিহাসিক ঘটনা এবং এর কিছুদিনের মধ্যে চট্টগ্রামের জালালাবাদ পাহাড়ে ব্রিটিশদের সঙ্গে সূর্যসেনের বিপ্লবী দলের সম্মুখযুদ্ধে সাময়িক হলেও ব্রিটিশদেরই পরাজয় হয়। সূর্যসেন ব্রিটিশদের কাছে ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। ব্রিটিশরা তাঁকে গ্রেফতারের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। ১৯৩৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সূর্যসেন ইংরেজ সেনাদের হাতে গ্রেফতার হয়ে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত হন। ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম কারাগারে এই বিপ্লবীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। দেশের জন্য মাস্টারদা সূর্যসেনের এই আত্মত্যাগ যুগ যুগ ধরে বিপ্লবীদের প্রেরণার উৎস হয়ে আছে।

’১৯৯৬ সালে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী প্রথম মাস্টারদা সূর্যসেনের স্মৃতি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেন। উদ্ধার করেন বেহাত হয়ে যাওয়া নোয়াপাড়ার বসতভিটে। বর্তমানে রাউজানে গড়ে উঠেছে মাস্টারদা স্মৃতি কমপ্লেক্স, সরকারি স্কুল। স্থাপন করা হয়েছে আবক্ষ মূর্তি, স্মৃতি পাঠাগার ও স্মৃতি তোরণ। এছাড়া একটি সড়কের নামকরণও করা হয়েছে তাঁর নামে। ২০১৮ সালের ১৬ই জানুয়ারি রাউজানের মুন্সিরঘাটাস্থ মাস্টারদা সূর্যসেন স্মৃতি পাঠাগার কমপ্লেক্স, আবক্ষ মূর্তির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখার্জি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.