কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে তিন বীর প্রতীকের নামে ভবনের নামকরণ
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার শতবর্ষীয় ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে যুদ্ধকালীন সময়ে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিন বীর প্রতীকের নামে তিনটি ভবনের নামকরণ করা হয়েছে। তারা হলেন স্কুলটির প্রাক্তন ছাত্র বীরপ্রতীক লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম হারুন- অর- রশিদ,বীরপ্রতীক শহীদ নৌ কমান্ডো মোহাম্মদ হোসেন, বীরপ্রতীক ফারুক-ই-আজম।
এ উপজেলার ১নং ফরহাদাবাদ ও ২ নং ধলই ইউনিয়ন মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার হিসাবে খ্যাত। কেননা উপজেলার আওতাধীন ৫শত ৮৪ জন তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে সিংহভাগ ধলই ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের অধিবাসী।
নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এসব বীরপ্রতীকদের পরিচয় করে দিয়ে স্মরণীয় করে রাখতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ২৬ মার্চ শুক্রবার কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের এদিন সকালে নামকরণকৃত ভবনের নামফলক উন্মোচন করা হয়।
এ উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুধী সমাবেশ এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ হোসেন চৌধুরী। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাতার দৌহিত্র মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার জিয়াউল কুদ্দুস। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নেন সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান বীরপ্রতীক লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম হারুন-অর- রশিদ।
স্বাগত বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিমুল কান্তি মহাজন। বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. অছিউদ্দিনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হারুন, কাটিরহাট মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ ছৈয়দুল আলম, ধলই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক, নুরুল আলম চৌধুরী, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের অভিভাবক সদস্য মো. সফিউল আজম চৌধুরী,সাবেক অভিভাবক প্রতিনিধি মো. সোহরাব হোসাইন চৌধুরী, বীরপ্রতীক শহীদ নৌ কমান্ডো মোহাম্মদ হোসেনের পরিবারের পক্ষে ভাগিনা মো. হাসানুর রশিদ। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী নেতা শাহজাহান মাহাবুব, এস এম নোমান, পবন বিকাশ দত্ত, মো. সেলিম, মো. শামসুল আলম, বিদ্যালয়ের সাবেক অভিভাবক সদস্য তৌহিদুল আনোয়ার মেম্বার, ছাত্রলীগ নেতা এইচ এম আলী আবরাহা দুলাল, ব্যারিস্টার বদরুল, এম ইরফান চৌধুরী নয়ন, হেলাল মাসুদ মজুমদার।
বীরপ্রতীকদের জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. বাদশা আলম, নুরুল ইসলাম, মো. মনির আহমদ। পবিত্র কোরান থেকে তেলাওয়াত করেন সৈয়দ মো. শাহেদুল আলম, গীতা পাঠ করেন অমিত কুমার নাথ।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল আলোচনায় সাবেক সেনা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম হারুন- অর- রশিদ বলেন- তিনি নিজেকে কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের গর্বিত শিক্ষার্থী মনে করেন। তিনি কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য তুলে ধরেন। তিনি বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন বলে উল্লেখ করে এ মহান নেতার জন্ম না হলে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের কথা কল্পনা করা যেত না। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে তৈরি করার জন্য জাতির জনক যখন কাজ শুরু করেছিল মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিরোধী চক্র তাকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করে। ভাগ্যক্রমে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে যান। তিনি তার পিতার লালিত স্বপ্ন দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করে বিশ্বে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। দেশের উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সকলকে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহবান জানান।
তিনি সকলকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি