বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের ইন্তেকাল

0 307
অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান

অধ্যাপক, লোক সংস্কৃতি ও পল্লীসাহিত্য গবেষক এবং বাংলা একাডেমির প্রাক্তন মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান আজ বুধবার (১৪ এপ্রিল) ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিঊন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক-

বাংলা একাডেমির সভাপতি ও সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আলাদা আলাদা বাণীতে তারা শামসুজ্জামান খানের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের সংক্ষিপ্ত জীবনী-

অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান ২৯ ডিসেম্বর ১৯৪০ সালে মানিকগঞ্জ জেলার চারিগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শামসুজ্জামান খানের বাবা এম আর খান কলকাতার সরকারী বাড়িতে অনুবাদক হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর দাদার দাদা এলহাদাদ খান এবং তার ভাই আদালাত খান ঐপনিবেশিক ভারতে অত্যন্ত প্রশংসিত নামী বুদ্ধিজীবী ছিলেন। শামসুজ্জামান খান মাত্র দুবছর বয়সে বাবাকে হারান। তার মা এবং দাদি তাঁকে লালন-পালন করেন।

শামসুজ্জামান খান ১৯৬৩ এবং ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাক্রমে অনার্স এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৬৪ সালে মুন্সীগঞ্জ হারাগঙ্গা কলেজের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। একই বছর তিনি জগন্নাথ কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬৮-৭৩) এবং বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৯৯-২০০১) এর শিক্ষক ছিলেন।

২৪ মে ২০০৯ সালে তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হন। তার পদের মেয়াদ তিনবার বাড়ানো হয় যা ২৩ মে ২০১৮ সালে শেষ হয়। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১ অক্টোবর ২০১৮ সালে শামসুজ্জামান খান কুষ্টিয়ায় বাংলাদেশের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’-এর অধ্যাপক পদে নিয়োগ পান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কর্ম হল ‘বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা’ শিরোনামে ৬৪ খণ্ডে ৬৪ জেলার লোকজ সংস্কৃতির সংগ্রহসালা সম্পাদনা এবং ১১৪ খণ্ডে ‘বাংলাদেশের ফোকলোর সংগ্রহমালা’ সম্পাদনা।

পুরস্কার ও সম্মননা-

অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার (১৯৮৭), কালুশাহ পুরস্কার (১৯৮৭), দীনেশচন্দ্র সেন ফোকলোর পুরস্কার (১৯৯৪), আব্দুর রব চৌধুরি স্মৃতি গবেষণা পুরস্কার (১৯৯৮), দেওয়ান গোলাম মোর্তজা পুরস্কার (১৯৯৯), শহীদ সোহরাওয়ার্দী জাতীয় গবেষণা পুরস্কার (২০০১), মীর মশাররফ হোসেন স্বর্ণপদক (২০০৪), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (২০০১), একুশে পদক (২০০৯), স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৭)।

Leave A Reply

Your email address will not be published.