‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডহক-মাস্টার রোল নিয়োগ দিলে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ’

0 172

শিক্ষা ডেস্ক : 

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে ‘স্ট্র্যাটেজিক প্লান ফর হায়ার অ্যাডুকেশন ইন বাংলাদেশ : ২০১৮-২০৩০’ সফল বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ।

তিনি স্ট্র্যাটেজিক প্লানের উপাদানগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের জন্য সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। এসময় ইউজিসি চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালা অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা এবং উচ্চশিক্ষার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে কাজ করার পরামর্শ দেন।

সভায় দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অ্যাডহক ও মাস্টার রোলে নিয়োগ বন্ধে নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে ইউজিসি।

বুধবার (২ জুন) ‘স্ট্র্যাটেজিক প্লান ফর হায়ার অ্যাডুকেশন ইন বাংলাদেশ : ২০১৮-২০৩০’ বাস্তবায়ন মনিটরিং করার লক্ষ্যে ইউজিসিপর্যায়ে গঠিত কমিটির দ্বিতীয় ভাচুর্য়াল সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান এ আহ্বান জানান।

অ্যাডহক ও মাস্টার রোলে নিয়োগ বিষয়ে সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডহক ও মাস্টার রোলে নিয়োগ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। যদি কেউ ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে নিয়োগ দেয়, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নিয়োগে ফান্ড বন্ধ করে দেয়া হবে।’

কমিটির আহ্বায়ক এবং ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. কাজী শহীদুল্লাহ-এর সভাপতিত্বে সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম, অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, ইউজিসি’র সাবেক সদস্য, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের সদস্য, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ইউজিসির সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধান ও কর্মকতারা সংযুক্ত ছিলেন।

সভায় কমিশনের এসপিকিউএ বিভাগের পরিচালক ড. ফখরুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য দেন।

সভায় অংশ নেয়া উপাচার্য ও ইউজিসির সদস্যরা বলেন, উপাচার্যদের কেউ কেউ ইউজিসির নির্দেশনা উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ নিজস্ব এখতিয়ারে অ্যাডহক ও মাস্টার রোলে জনবল নিয়োগ করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে বিতর্কের মুখে ফেলছেন।

সভায় অংশ নেয়া উপাচার্যরা এবং সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জানান, অস্বচ্ছ ও অনৈতিক নিয়োগ এবং আর্থিক বিধিমালা লঙ্ঘিত হওয়ার ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। অ্যাডহক ও মাস্টার রোলে নিয়োগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট উপাচার্যরা বিতর্কিত হচ্ছেন। অন্যদিকে যেসব উপাচার্য এ ধরনের অনৈতিক নিয়োগ দিতে চান না, তাদের ওপর অহেতুক চাপ তৈরি হচ্ছে। প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগের সুযোগ না থাকায় অদক্ষ লোক নিয়োগ পাচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মের সংস্কৃতি চালু হচ্ছে।

উপাচার্যরা আরও বলেন, চাকরিতে প্রবেশে নাগরিকের সমানাধিকার সংবিধান স্বীকৃত। অ্যাডহক নিয়োগে বাংলাদেশের সংবিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ অধিকার সুরক্ষায় সকল ধরনের অনৈতিক নিয়োগ বন্ধ করা প্রয়োজন। এছাড়া উপাচার্যরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ইউজিসি প্রণীত শিক্ষক নিয়োগ—পদোন্নয়নের নীতিমালা যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।

সভায় একটি ফ্লাগশীপ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, শিক্ষকদের জন্য প্রয়োজনীয়তার নিরিখে স্কলারশিপ চালু, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়ন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিখন–শিক্ষণ কেন্দ্রকে আইকিউএসির অন্তভূর্ক্ত করার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.