ঢাকার মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনা বোম্ব এক্সপ্লোসন ইউনিট নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। সোমবার (২৮ জুন) বেলা ১১টা ১০ মিনিটে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এটি একটি একমুখী ধ্বংসযজ্ঞ। বোমা হলে চতুর্মাত্রিক ধ্বাংসযজ্ঞ হতো। তবে সবগুলো বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করে দেখা হবে।’
স্থানীয়রা জানিয়েছেনন, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় আশপাশের ডজনখানেক ভবনের কাচ চৌচির হয়ে ভেঙে পড়ে। সড়কে থাকা দুটি বাসও দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে দেখা যায় আউটার সার্কুলার রোডের ৭৯ নম্বর হোল্ডিংয়ের তিনতলা ভবনটির প্রায় ধসে পড়ার দশা হয়েছে। সড়কের উপর দুটি বাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়, ভেতরে যাত্রীদের রক্ত আর জিনসপত্র পড়ে ছিল।
এ ঘটনায় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, গ্যাস বিস্ফোরণ থেকে এই বিস্ফোরণ। ভবনের নিচতলায় ফাস্ট ফুডের দোকান ছিল। দ্বিতীয় তলায় একটা শো রুম ছিল। সেখানে ফ্রিজ ছিল। তিন তলায় ছিল একটা স্টুডিও। ভবনের সামনের সড়কে কাজ চলছে। সেখানেও গ্যাস ও ইলেকট্রনিক তার রয়েছে। কীভাবে এই বিস্ফোরণ তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলে আমরা যেটা জেনেছি, এখানে যে শর্মা হাউজ ছিল মূলত সেখান থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে খুব সম্ভবত গ্যাস জমেছিল এবং এই গ্যাস বিস্ফোরণের কারণে আশেপাশের সাতটা বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুইটা বাস বিধ্বস্তের মতো হয়েছে। ৫০ জনের উপরে আহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা সাতজন মারা গেছে বলে খবর পেয়েছি।’
এটা নাশকতা কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নাশকতা না। নাশকতা হলে বোমা বিস্ফোরণ হতো। সেখানে স্প্লিন্টার পাওয়া যেত। স্প্লিন্টারের আঘাতে মানুষ ক্ষতবিক্ষত হতো। আশাপাশে আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত বাস দেখেছেন। বাসে কোনো স্প্লিন্টারের কণা পাওয়া যায়নি। অতএব নিশ্চিতভাবে বলা যায় বোমার কোনো ঘটনা এখানে নাই। গ্যাস থেকেই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইনও গ্যাস জমে বিস্ফোরণের ধারণার কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। এটা বলতে রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। ভবনটির সামনে রাস্তায় ট্রেনেজ লাইনের কাজ হচ্ছে। সেটার কারণে লিকেজ হতে পারে। কোনটিই নিশ্চিত নয়। তদন্তের পর বলা যাবে।’
মগবাজারের এ বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত ও দগ্ধ অর্ধশতাধিক ব্যক্তির মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট এবং পাশের ঢাকা কমিউনিটি ক্লিনিক ও আদ্ব-দীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।