বর্ষায় নখকুনি সারাতে যা করবেন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বর্ষা এলেই নখকুনির সমস্যা বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে নখের চারপাশে লালচে হয়ে ফুলে যায়। সেইসঙ্গে প্রচণ্ড ব্যথায় কষ্ট পান ভুক্তভুগীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যকটেরিয়া সংক্রমণের ফলেই নখকুনি হয়ে থাকে। নখের চারপাশের যেকোনো স্থানে এমন সমস্যা হতে পারে।
ট্রিস্ট (বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক) জিওরজিয়ানি বুটেক জানান, নখের কোনো পাশের ত্বকে সৃষ্টি হওয়া ফাটলের মধ্য দিয়ে সহজেই ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করতে পারে। নোংরা পানি বা ঘাম, ময়লা, ধূলা-বালি ইত্যাদি সংক্রমণ সৃষ্টি করে। এর ফলে আরও যন্ত্রণা হতে থাকে।
নখ হলুদ হয়ে যাওয়ার সমস্যা অনেকেরই থাকে৷ চলতি কথায় যাতে বলে নখকুনি৷ হাতের নখের থেকেও পায়ের নখে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়৷ কারণ পায়ের নখকে অনেক বেশি ধুলো, মাটি, ঘাম, জল সহ্য করতে হয়৷ যার ফলে ছত্রাক বাসা বাঁধে ৷ খালি পায়ে সুইমিং পুলের জলে বেশি স্নান করলেও এই রোগ হতে পারে৷ অনেকে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে খারাপ হয়ে যাওয়া নখের জন্য স্পোরানক্স বা ল্যামিসির মতো মলম ব্যবহার করে থাকেন ৷ যদিও তা বেশ খরচ সাপেক্ষ৷ তাহলে কীভাবে নিজের নখের যত্ন নেবেন? কীভাবেই বা নখের হলুদ হয়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন? এই প্রতিবেদনে রইল কিছু সহজ উপায়৷
>> হালকা গরম পানিতে কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে রাখলে নখকুনির ব্যথা ও ফোলা কমে যায়। এক্ষেত্রে পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকুন ১৫-২০ মিনিট। দিনে ৩-৪ বার এটি করতে পারেন।
>> গরম পানিতে পূর্ণ একটি বোলে ১ টেবিল চামচ ইপসম লবণ মিশিয়ে ওই মিশ্রণে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে বসে থাকুন। সপ্তাহে ৩/৪ বার এই প্রক্রিয়াটির পুনরাবৃত্তি করুন।
>> এ ছাড়াও হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল সাবান, জীবাণুনাশক দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
>> ২ কাপ হালকা গরম পানিতে এক কাপ সাদা ভিনেগার মিশিয়ে ১৫ মিনিট নখকুনি আক্রান্ত আঙুলটি ডুবিয়ে রাখুন। তারপর মুছে নিন। দিনে ২-৩ বার এই উপায় অনুসরণ করলে দু-একদিনের মধ্যে সেরে যাবে নখকুনি।
>> নখকুনি আক্রান্ত অংশে জায়গায় দু-এক ফোঁটা পাতিলেবুর রস লাগান। ২৫-৩০ মিনিট রেখে উষ্ণ গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। যত দিন না সারছে; তত দিন এই পদ্ধতি মেনে চলুন।
>> এক চামচ নারকেল তেলে দু-তিন ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে নিন। এই তেল তুলো দিয়ে নখকুনি আক্রান্ত অংশে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন। দিনে দু-তিনবার ব্যবহার করলে দ্রুত সেরে যাবে নখকুনি।নখকুনি প্রতিরোধে যা করবেন
>> নখ সব সময় সোজাভাবে কাটতে হবে, পায়ের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, বাইরে থেকে আসার পর পা ও হাত ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে মুছে ফেলতে হবে, পরিষ্কার জুতা ও মোজা পড়তে হবে, আরামদায়ক ও পায়ের মাপ মতো জুতা পড়তে হবে, প্রতিদিন গোসলের সময় পায়ের নিচের শক্ত চামড়া পরিষ্কার করতে হবে।
>> নখ কাটার সময় গোলাকার ভাবে না কেটে সোজা ভাবে কাটুন। বিশেষ করে গোলাকার ভাবে কাটা নখের কোনা আঙ্গুলের ভেতর ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
>> সঠিক মাপের জুতা পরুন। টাইট জুতা পরার ফলে পায়ের নখে অনেক বেশি চাপ পড়ে, ফলে নখ আঙ্গুলের ভেতর ঢুকে যায়।
>> নখ কাটার জন্য কখনোই ব্লেড, কাঁচি বা এমন অপ্রচলিত কিছু ব্যবহার করবেন না। এ ছাড়া নখের ভেতর কাঠি বা কলমের ডগা ইত্যাদি দিয়ে খোঁচাবেন না। নেইল কাটার সেট পাওয়া যায়, সেখানে বিভিন্ন মাপের নেইলকাটার থাকে।