পরীমনির সঙ্গে মিষ্টি সম্পর্ক, সেটা শুধুই কাজের ক্ষেত্রে: চয়নিকা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনির সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে ‘মিষ্টি’ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে জানিয়েছেন পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী।
আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যার দিকে রাজধানীর পান্থপথে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বেরিয়ে চয়নিকা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর পরপরই অবশ্য তাকে আটক করে ডিবি।
আটকের আগে চয়নিকা আরো বলেন, আমি পরীমনি এমন অপরাধমূলক কোনো কর্মকাণ্ডে দেখিনি। যদিও আমার আর পরীমনির কাজের সময়টা অল্প, শুধুমাত্র শ্যুটিংয়ের সময়টুকুই। ওর ব্যক্তিগত যা যা কিছু, তা ওর ব্যক্তিগত জায়গায় আছে। সেগুলো নিয়ে আমি কখনো মাথায় ঘামাইনি।
পরীমনির বাড়িতে আসা-যাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তার বাসায় আসা-যাওয়া করতাম, সেটা সব সময় না। বোট ক্লাবের ঘটনার পর গিয়েছিলাম। তার ৪১ দিন পর আবার আমার সঙ্গে তার দেখা হয়েছে ।পরীমনির বাসায় গেলে আমি এক-দেড় ঘণ্টা থাকতাম।
পরীমনি ও রাজকে গ্রেপ্তার এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বিষয়ে চয়নিকা বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি সবাই যেভাবে দেখছে, আমিও সেভাবেই দেখছি। যেহেতু বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে চলে গেছে, সেহেতু এটা আইনিভাবে দেখা উচিত। এখন আমরা কোনো ধরনের কথা বলতে পারব না। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, কোনো কারণে আমাকে যদি পুলিশ ডাকে, আমার কাছে যদি কিছু জানতে চায়। আমি অবশ্যই তাদের (আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যালয়) ওখানে যাব। আমি জানি, আমি খুব পরিচ্ছন্ন মানুষ। আমি এমন কিছু করিনি যেটা কোনো ক্রাইম (অপরাধ) হবে। আমার মনটা যেহেতু পরিষ্কার, আমাকে ডাকলে যে কোনো কিছুতে গিয়ে তাদের উত্তর দিয়ে আসব। তাদের (আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী) প্রতি আমি অনেক শ্রদ্ধাশীল।
এদিকে, সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ শেষে পান্থপথ থেকে বাসার পথে রওনা হন চয়নিকা। কিছু দূরে যেতেই সড়কে তার গাড়ি থামায় ডিবি পুলিশের একটি টিম। তার সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলার পর তাকে ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়। তবে রাত সাড়ে ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়নি।
ওই সময় ডিবি সূত্র জানিয়েছিল, চয়নিকাকে আটকের পর তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে পরীমনি ও তাকে মুখোমুখি করে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর ডিবির (উত্তর) যুগ্ম-কমিশনার হারুন-অর-রশিদ চয়নিকা চৌধুরীকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পরীমনি ও রাজের মামলা আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে আমরা যে কাউকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারি।
এর আগে বুধবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানীতে পরীমনির বাসায় প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে তাকে আটক করে র্যাব। এসময় তার বাসা থেকে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়।
পরদিন তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। ওই মামলায় তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরীমনির মামলাটি পরে ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে, পরীমনির বাসায় মাদক সরবরাহ ও পর্নোগ্রাফি তৈরির অভিযোগে প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজকেও আটক করে র্যাব। তার বিরুদ্ধেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনেও আরেকটি মামলা করা হয়। পরে মাদক মামলায় আদালত রাজের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, চয়নিকা চৌধুরী বাংলাদেশের একজন আলোচিত পরিচালক। ২০০১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘শেষ বেলায়’ নাটকের মধ্য দিয়ে পরিচালনা শুরু করেন তিনি।
‘বিশ্বসুন্দরী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে তার। ওই সিনেমার নায়িকা পরীমনি। এই সিনেমার কাজের পর থেকে নায়িকা পরীমনির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।