নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন: সরকার ও বিরোধীদলের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য

0 169

বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি আবারো দাবী করেছে, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনা ছাড়া দেশে কোন সুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভব নয়। আর সুষ্ঠ নির্বাচন না হলে বিএনপি তাতে অংশগ্রহন করবেনা।

বিএনপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্বের সাথে কয়েকদিনের ধারাবাহিক মতবিনিময় সভা শেষে সংগঠনের মহাসচীব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান।

অপরদিকে  আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আগামী বছর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রাক্কালে বিএনপি আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। নির্বাচন কমিশন যথাসময়ে যেভাবে হয়, আমাদের দেশের আইনগত প্রক্রিয়ায়ই করার যে বিধান রয়েছে, সেভাবে সংবিধান অনুযায়ী গঠন করা হবে। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।’

আজ শনিবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভার সূচনা বক্তব্যে এমন মন্তব্য  করেন ওবায়দুল কাদের।

বিএনপি সরকারবিরোধী সিরিজ ষড়যন্ত্রের রূপকল্প তৈরির গোপন বৈঠক করছে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের বলেন, অবৈধ, অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের হাতে প্রতিষ্ঠিত বিএনপির গণতান্ত্রিক রীতিনীতির কোনো দায়ভার নেই। তাদের তথাকথিত বিশেষ যে সিরিজ সভাগুলো হয়েছে, এগুলো অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা নয়। এই সিরিজ সভা সিরিজ বোমার পৃষ্ঠপোষক বিএনপির সিরিজ ষড়যন্ত্রের রূপকল্প তৈরির গোপন বৈঠক। অপরদিকে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক স্পষ্ট করেই বলেছেন “বাংলাদেশে আর কোনো নিরপেক্ষ সরকার হবে না , তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না বাংলাদেশে হবে সাংবিধানিক সরকার। সংবিধানের আলোকে আগামী দিনে নির্বাচন হবে এবং সেটির দায়িত্ব পালন করবে নির্বাচন কমিশন। আজ শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে টাঙ্গাইল সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

সংবিধানের আলোকে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। যে নির্বাচন কমিশনের ওপর কোনো সরকারের, কোনো প্রধানমন্ত্রীর, কোনো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভূমিকা থাকবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো নিয়ন্ত্রণ সেখানে করতে পারবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সামরিক বাহিনী স্বাধীনভাবে কাজ করবে এবং সুন্দর-সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ওদিকে,  বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. আলী রীয়াজ আজ ঢাকার একটি দৈনিকের সাথে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি আগামী নির্বাচন নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন।

ডঃ আলী রিয়াজ বলেছেন, আমি এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচন, অবাধ নির্বাচন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের কিছু দেখতে পাচ্ছি না। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নামে একটা নির্বাচন হবে। সেটা ২০১৮-তেও হয়েছে, ২০১৪- তেও হয়েছে। নির্বাচনে সকল  রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে পারছে কিনা তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো ভোটাররা ভোট দিতে পারছেন কিনা।

তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা আছে তবে এখনো সেটা কাগজে-কলমে, বাস্তবে নয়। কারণটা রাজনৈতিক। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে কোন ধরনের নির্বাচন হবে।

নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুই দুইবার সার্চ কমিটির মাধ্যমে এ কাজটি করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানেতো এমন কোনো ব্যবস্থাই নেই! সংবিধানে লেখা আছে একটি আইন করা হবে। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও তা করা হয়নি।

– নিউজ ডেস্ক, দেশী টুয়েন্টিফোর

Leave A Reply

Your email address will not be published.