পরকীয়া প্রেমের কারনে নিজের নানাকে খুন

0 440

চুয়াডাঙ্গায় ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে বিষ প্রয়োগ করে শামসুল শেখ নামে এক বৃদ্ধকে হত্যার ঘটনার নতুন মোড় নিয়েছে। নাত-জামাই জাহিদ হাসান নয়, পরকীয়া প্রেমিক রাশেদের কথামতো নিজের নানাকে খুন করেছে বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে নাতনি কামনা খাতুন।

আজ সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত রোববার (৫ ডিসেম্বর) কামনা খাতুন তার প্রেমিক রাশেদকে জড়িত করে ১৬৪ ধারায় চুয়াডাঙ্গা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইদুল ইসলামের আদালতে নানা শামসুল শেখকে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

আজ শনিবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কামনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডাকে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

উল্লেখ্য, বৃদ্ধ শামসুল শেখের নাতনি কামনা খাতুন তার বিবাহের পরে রাশেদ নামের এক যুবকের সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে। কিছুদিন আগে কামনার সাথে তার স্বামী জাহিদ হাসানের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এর পর থেকে কামনা নানা ও নানীর সাথে থাকতে শুরু করে। এরই মধ্যে কামনার পরকীয়া প্রেমের বিষয়ে জেনে যায় বৃদ্ধ শামসুল শেখ। এ ঘটনায় শামসুল শেখ কামনাকে বকা-বকি করলে সে তার পরকীয়া প্রেমিক রাশেদের সাথে নিয়ে নিজ নানা শামসুল শেখতে হত্যার পরিকল্পনা করে।

গত (২৯ নভেম্বর) সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে শামসুল শেখ বাড়ির বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকাকালীন একটি বিষ ভর্তি ইনজেকশন নিয়ে সেখানে হাজির হয় কামনার পরকীয়া প্রেমিক রাশেদ। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী রাশেদ শামসুল শেখের পা চেপে ধরে ও কামনা ইনজেকশনটি তার নানার ঘাড়ে পুশ করে। এসময় শামসুল শেখের ঘুম ভেঙ্গে গেলে সে রাশেদকে পালাতে দেখে। কিন্তু অন্ধকার থাকায় রাশেদকে তার নাতিজামায় জাহিদ ভেবে চিৎকার করে এবং তার গলায় জাহিদ ইনজেকন ফুটিয়ে পালিয়েছে বলে জানায়। সেদিন রাতেই পরিবারে সদস্যরা শামসুল শেখকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাপসাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ ডিসেম্বর বুধবার সকাল আটটার দিকে বৃদ্ধ শামসুল শেখের মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর পরে নিহত শামসুল শেখের ছেলে রফিকুল বাদি হয়ে জাহিদ হাসানকে আসামি করে সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত নাতজামায় জাহিদ হাসানকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে ঘটনার পর থেকেই পুলিশ হত্যা ঘটনার মূল রহস্য উন্মোচনের জন্য কাজ শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে পুলিশ খুন হওয়া শামসুল শেখের নাতনি কামনাকে আটক করে। পরবর্তীতে কামনা তার পরকীয়া প্রেমের কারণে প্রেমিক রাশেদকে সাথে নিয়ে নিজ নানাকে খুনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের বিষয়টি স্বীকার করে। রোববার কামনা ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘পুলিশের টিম ঘটনার মূল রহস্য উন্মোচনে কাজ করছিল। এরই মধ্যে একটি সূত্র ধরে নাতনি কামনা খাতুনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে খুনের সাথে জড়িত থাকায় কামনা তার পরকীয়া প্রেমিক রাশেদের নাম সামনে আনলে তাকেও আটক করা হয়।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.