সার্জেন্ট মহুয়ার বাবার ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা : ডিবি
রাজধানীর বনানী থানার চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বাবার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেওয়ার ঘটনায় মামলা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার।
আজ রবিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আক্তার বলেন, আমি শুনেছি এ ঘটনায় বনানী থানায় একটি মামলা হয়েছে। পাশাপাশি একটি জিডিও হয়েছে। তবে মামলায় আসামির নাম অজ্ঞাত থাকলেও তদন্ত যেহেতু হচ্ছে তদন্তেই এর বিস্তারিত বেরিয়ে আসবে। এক্ষেত্রে একজন সাধারণ বিচারপ্রার্থী যেভাবে বিচারের প্রত্যাশা করে সার্জেন্ট মহুয়ার বেলায়ও একইভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়া না দেওয়া একই কথা। তদন্তে দায় পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, তদন্তের স্বার্থেই ঘটনাস্থল ও আশপাশ থেকে সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করা হবে। সিসি ফুটেজই বলে দেবে সেদিন রাতে কি ঘটেছিল এবং কার কতটুকু দায়, কার কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা নিশ্চিত হয়ে সেভাবেই তদন্ত করবো।
উল্লেখ্য, গত ২ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি সড়কে একটি দ্রুতগতির গাড়ির চাপায় আহত হন সার্জেন্ট মহুয়ার বাবা মনোরঞ্জন হাজং। তাকে উদ্ধার করে শ্যামলীর পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। গুরুতর অবস্থার কারণে অস্ত্রোপচার করে তার ডান পা কেটে ফেলতে হয়েছে। এরপর শাহবাগের বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে।
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মনোরঞ্জন হাজং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার। তার মেয়ে মহুয়া হাজং ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে ডিএমপিতে কর্মরত। দুর্ঘটনার পর তিনি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ প্রথমে মামলা নেয়নি। এমনকি ঘটনার পর পথচারীরা চাপা দেওয়া সেই গাড়ি ও চালকসহ অন্য যাত্রীদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও তারা ছাড়া পেয়ে যায়।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে চালকের আসনে ছিলেন বিচারপতি রেজাউল হাসানের ছেলে সাইফ হাসান। তার স্ত্রী অন্তরা সাইফ আর বন্ধু রোয়াদও গাড়িতে ছিলেন। দুর্ঘটনার পরই প্রভাবশালীদের চাপে গাড়ি ও এর যাত্রীদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। একইসঙ্গে তারা মহুয়া হাজংয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আপসের চেষ্টাও চালায়। কিন্তু মহুয়া হাজং মামলার বিষয়ে অটল থাকায় এবং গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় অনেক পুলিশ কর্মকর্তাও ক্ষুব্ধ হন।