মুজিববর্ষ-র বানান ভুল কেন?

0 528

বাংলাদেশে বিজয় দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তীতে দেশব্যাপী এক যোগে যে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, সেখানকার মূল পোডিয়ামে বানান ভুল থাকায় সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন অনেকে।

 

এ বিষয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি বলেছে, বানানটি ভুল ছিল কিন্তু সেটা নিয়ে কোন ব্যাখ্যা দেয়া হয় নি।

চলমান সব অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেই এর কারণ আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা হবে বলেও তারা জানিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে চারটার দিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় বানানো মঞ্চে উঠে শপথ পাঠ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভার্চুয়ালি সারা দেশের সব বিভাগ, জেলা, উপজেলার নির্ধারিত ভেন্যু থেকে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যে কারণে বাংলাদেশে ও দেশের বাইরের কোটি মানুষের চোখ ছিল টেলিভিশনের পর্দায় এবং ফেসবুক লাইভে।

সেখানে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রী যে পোডিয়াম বা ডায়াসের সামনে শপথ পাঠ করেছেন সেখানে মুজিববর্ষ বানানটি লেখা হয়েছে ‘মুজিবর্ষ’। অর্থাৎ মুজিববর্ষের মাঝখানের একটি ‘ব’ সেখানে নেই। যদিও শপথ পত্রে বানানটি লেখা হয়েছে ‘মুজিববর্ষ’।

এরপরেই সমালোচনার ঝড় ওঠে যে, যে দিবসকে ঘিরে এত আয়োজন সেই মুজিববর্ষের গুরুত্বপূর্ণ লোগোর মূল বানানটাই ভুল করেছে আয়োজক কমিটি।

আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয় যে, ডিভাইস ট্রান্সফারের এক পর্যায়ে ‘মুজিব বর্ষের’ একটি ‘ব’ অক্ষর বাদ পড়ে যায় বলে তারা প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছেন।

এই ভুলটি চোখে পড়ার পরই সেটি সংশোধনের পাশাপাশি ইভেন্ট আয়োজকদের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।

 

প্রধানমন্ত্রী যে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে শপথ পড়ছিলেন, সেখানে মুজিববর্ষের মনোগ্রামটি লেখা ছিল মূলত একটি গোলাকার এলইডি স্ক্রিনে।

আয়োজক কমিটির মিডিয়া কনসাল্টান্ট আসিফ কবীর বলেছেন, ইভেন্ট ব্যবস্থাপকরা জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী যে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে শপথ পড়ছিলেন, সেখানে মুজিববর্ষের মনোগ্রামটি লেখা ছিল মূলত একটি গোলাকার এলইডি স্ক্রিনে।

সেই মনোগ্রামে একটি বিশেষ লিপি বা ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। ল্যাপটপে মনোগ্রামের লেখা ঠিকভাবে এলেও সেটা এলইডি মনিটরে ট্রান্সফার করার পর ভেঙে মাঝের একটি ‘ব’ অক্ষর বাদ পড়ে যায় বলে তারা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন।

এ ব্যাপারে মি. কবীর বলেন, “ল্যাপটপে ডিজাইন ঠিকই ছিল। সেটা যখন চিপের মাধ্যমে এলইডি স্ক্রিনে ফেলা হয়েছে তখন সেটার মেকআপ ভেঙে যায়। এলইডির ক্রপ স্ক্রিনে ওই ফন্টটি সাপোর্ট করেনি, এ কারণে ‘ব’ টা সরে গিয়েছে।”

“কিছু ভুল কিভাবে হয় সেটাই বিস্ময়। এখানে ভুল অবশ্যই হয়েছে। এমনটা যেন পরবর্তীতে না হয় সে বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক থাকব। এ নিয়ে সমালোচনা হতে পারে। কিন্তু সেটা সংবেদনশীল ও বস্তুনিষ্ঠ হোক, এমন প্রত্যাশা করছি।”

 

ভার্চুয়ালি সারা দেশের সব বিভাগ, জেলা, উপজেলার নির্ধারিত ভেন্যু থেকে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

তবে বানান ভুলের বিষয়টি আয়োজকদের দৃষ্টিতে আসার পরপরই অনুষ্ঠানের বিরতির সময় এই ত্রুটি দ্রুত দূর করা হয় বলে জানান মি. কবীর।

গত বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর শপথের ছবি প্রকাশ হওয়ার পরই বানানের বিষয়টি সবার চোখে পড়ে।

শপথ পাঠের পরিবর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায় বানান প্রসঙ্গটি।

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ও ভারতের রাষ্ট্রপতিসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিরা। ছিলেন সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যোগ দেওয়া অগণিত মানুষ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.