এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ১২ ঘন্টা
দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে বেশ কিছু দিন ধরেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে আসছে। পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে ১ কিলোমিটার যেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে এক দিনেরও বেশি সময়। অপরদিকে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসগুলোকে ফেরি পেতে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
গতকাল রোববার সকাল থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যায়।ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, ফেরি কম, ঘাট স্বল্পতা ও নাব্য সংকটের কারণে এ দীর্ঘ সারি।
দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের আ. ওয়াজেদ চৌধুরী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটারজুড়ে পদ্মা পারের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত বাস ও ট্রাক। আটকে থাকা গাড়ি চালক ও তাঁদের সহকারী এবং বাসের যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ।
ট্রাক চালদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে ১ কিলোমিটার পথ যেতে সময় লাগছে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা। অনেক সময় এটুকু পথ পাড়ি দিতে এক দিন লেগে যায়। এ কারণে গাড়ির ভেতরেই অনেক সময় ঘুমাতে হয় তাঁদের। এ ছাড়া মহাসড়কের পাশে খাওয়া–দাওয়া ও টয়লেটের কোনো ব্যবস্থা নেই।
সিরিয়ালে দীর্ঘ সময় আটকে থাকা রাসেল পরিবহনের যাত্রী এনামুল হক জানান, জরুরি কাজে ঢাকা যেতে হচ্ছে। ঘাটে যানজটের কথা জানা থাকলেও ভেবেছিলেন আজ একটু কম থাকবে। কিন্তু ঘাটে এসে দেখেন খুব খারাপ অবস্থা। ৩ ঘণ্টা ধরে সিরিয়ালে আটকে আছেন। সময়মতো ঢাকা পৌঁছাতে না পারলে কাজটাই হয়তো করা হবে না জানান তিনি।
স্টার লাইন বাসের এক চালক বলেন, আগে দূরপাল্লার বাসের লাইনে জরুরি সেবার গাড়ি ছাড়া কাভার্ড ভ্যান বা ট্রাক দেওয়া হতো না। কিন্তু এখন বাস–ট্রাক একসঙ্গে দেওয়াতে যাত্রীরা সময়মতো গন্তব্যে যেতে পারছেন না।
ট্রাকচালক মামুন বলেন, ‘শনিবার সকালে এসেছি। এক দিনেরও বেশি সময় সিরিয়ালে থেকে এখনো ঘাট থেকে ১ কিলোমিটার দূরে আছি। আরও কতক্ষণ লাগে কে জানে।’
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট বড় মিলিয়ে ১৪টি ফেরি চলাচল করছে। যেখানে চলার দরকার ২০ টি। দৌলতদিয়ার ৭টি ঘাটের মধ্যে ২টি বন্ধ। ৫টি ঘাটে ৫টি পন্টুন এবং ১০টি পকেট রয়েছে। নাব্য সংকটের কারণে ৭ নম্বর ফেরিঘাটের একটি পকেট বন্ধ রেখে ড্রেজিং করা হচ্ছে। ড্রেজিং শেষ হলে তা খুলে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, শিগগিরই ৮ নম্বর ঘাট করা হবে। সেই সঙ্গে ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারলে যানজট অনেকটাই কমবে।