সম্পদ বিক্রি করে খরচ চালাবে ইভ্যালি

0 493

গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আলোচিত ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালি আপাতত সাবেক এমডি মোহাম্মদ রাসেলের বিলাসবহুল গাড়িসহ অন্যান্য সম্পদ বিক্রি করে পরিচালন ব্যয় বহন করবে।

ইভ্যালির সম্পদ বিক্রি ও হস্তান্তরে আদালতের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এ কথা জানান।

তিনি বলেন, হাই কোর্টের আদেশটি পেয়ে আমরা অনেকখানি আনন্দিত হয়েছি। এটি ভবিষ্যতের জন্য কিছুটা হলেও আলো দেখাচ্ছে।

বলা যায়, সুড়ঙ্গের শেষপ্রান্তে আলোর রেখা দেখতে পাচ্ছি। যারা ইভ্যালিতে জিনিসপত্র বিক্রি করেছেন কিংবা যারা ক্রয় করেছেন তাদের পাওনা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। কিছুটা প্রয়াস হলেও রাখব। কিন্তু এটা সময়ের ব্যাপার। অডিট চলার সময় আমরা আরও ভালো চিত্র জানতে পারব।

প্রতারণার একাধিক অভিযোগে গতবছরের ১৫ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন গ্রেপ্তার হন। তার কয়েকমাস আগে থেকেই বেতন পাচ্ছিলেন না কোম্পানির প্রায় দুই হাজার কর্মী।

এ অবস্থায় ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে এক গ্রাহকের আবেদনে ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সম্পদ বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেয় হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ। পরে ১৮ অক্টোবর ইভ্যালির অবসায়ন এবং তার আগে ইভ্যালির ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে নিতে চার সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয় হাই কোর্ট।

আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে চেয়ারম্যান করে গঠিত এই পর্ষদে সদস্য হিসেবে আছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. রেজাউল আহসান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলনকে করা হয়েছে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

ওই পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রায় তিন মাস পার হলেও কোম্পানির নিয়মিত খরচ বহনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না জানিয়ে বিচারপতি মানিক বলেন, “আদালতের রায়ে দুই কোটি ৩৫ লাখ টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। এটা ইভ্যালির পাওনাদারদের পাওনার তুলনায় খুবই অপ্রতুল। কিন্তু এর থেকে সুবিধা যেটা হবে, সেটা হচ্ছে ১৫ জন সিকিউরিটি গার্ড ও ১৫ জন কর্মচারী- এই ৩০ জন লোকের বেতন দেওয়া যাবে। তারা গত তিন মাস ধরে কাজ করছে।”

ইভ্যালির প্রধান কার্যালয়ে এখন যে ১৫ জন কর্মী কাজ করছেন, তাদের মধ্যে অ্যাকাউন্ট্যান্ট আছেন চারজন। অডিটের জন্য কাগজপত্র তৈরি করতে তাদের কাজে লাগানো হচ্ছে।

এছাড়া সাভারের তিনটি গুদামের মালামাল পাহারা দিতে রয়েছেন ১৫ জন নিরাপত্তাকর্মী। তাদের তিন মাস আগে নিয়োগ দেওয়া হলেও বেতন দেওয়া যায়নি।

পর্ষদ চেয়ারম্যান মানিক বলেন, আরেকটি বড় খরচ হবে অডিট করাতে, সেটার আইনি বাধ্যবাধকতাও রয়েছে।

রাসেল গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দেওয়া ইভ্যালির প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর জুলাই পর্যন্ত তাদের দায়-দেনার পরিমাণ ছিল ৫৪৩ কোটি টাকা। এর বিপরীতে তার কী পরিমাণ সম্পদ রয়েছে তার সুস্পষ্ট ধারণা এখনও পাওয়া যায়নি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.