শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সমাধান আসেনি বৈঠকে, চলবে অনশন

0 208

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

গতকাল শনিবার (২২ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে সোয়া এক ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক হয়। রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনের ১২৯ নম্বর কক্ষে আলোচনা শুরু হয়। এতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তবে এ বৈঠকে চলমান সংকট নিয়ে কোনো সমাধান আসেনি।

বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিনিধি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল এ তথ্য জানান।

শফিউল আলম নাদেল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনশন নিয়ে চিন্তিত শিক্ষামন্ত্রী। তাই তিনি অনুরোধ করেছেন এই কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা যেন সরে আসেন। একই সঙ্গে কোনো শিক্ষার্থী অ্যাকাডেমিক বা আইনি হয়রানির শিকার যেন না হয় সেই বিষয়টি দেখা হবে।’ তবে উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী কোনো মন্তব্য করেননি বলে জানিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে, বৈঠক শেষ হওয়ার পরপরই বাইরে অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে স্লোগান দেন। রাত আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের মোহাইমিনুল বাশার সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষামন্ত্রীকে তাঁরা নিজেদের দাবির বিষয়ে অবহিত করেছেন। রোববার বেলা দুইটার পর পুনরায় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তবে আলোচনার পাশাপাশি আন্দোলনও চলবে। আমরণ অনশন চলমান রেখেই তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবেন।

উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে গত ১০ দিন ধরে উত্তাল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বশেষ গত বুধবার উপাচার্যের বাসার সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে একজনের বাবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরের দিনই বাড়ি চলে যান। বাকি ২৩ অনশনকারীর মধ্যে এখন ১৭ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকি ৬ শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ ছাত্রীদের আন্দোলনে হামলা চালায়। পরের দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ওই হামলার প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন নাগরিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.