শর্ত ছিল নির্বাচনসংশ্লিষ্টরা এফডিসিতে ঢুকতে পারবেন: এফডিসির এমডি

0 456

নুজহাত বলেন, ‘নির্বাচন ছিল শুক্রবার, ওই দিন অন্য কারও প্রবেশ করারও তেমন প্রয়োজন হয় না। তাই আমরা বলেছি, ভোটার এবং ভোটারসংশ্লিষ্টরা আসবেন এবং রেজিস্ট্রিকৃত মিডিয়া যারা আছে তারা আসবে। এগুলো নির্বাচন কমিশনার নিজেই ঠিক করে নেবেন, কে আসবে।’

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের দিন শুক্রবার এফডিসিতে ঢুকতে না পারার অভিযোগে গত শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নুজহাত ইয়াসমিনের পদত্যাগের দাবি ওঠে। গণমাধ্যমের সামনে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ১৭ সংগঠনের পক্ষে এ দাবি করেন পরিচালক সমিতির সভাপতি পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান।

এক দিন পর রোববার এমডির অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করেন পরিচালক, প্রযোজকসহ ১৭টি সংগঠনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সকাল ১০টায় এফডিসির প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমবেত হয়ে নিজেদের ক্ষোভের কথা বলেন পরিচালক-প্রযোজকরা।

এক ঘণ্টা পর সংবাদ সম্মেলন করেন এফডিসির এমডি নুজহাত ইয়াসমিন।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টা পরিষ্কার করা দরকার। বিএফডিসি কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে আমি এটা পরিষ্কার করতে চাই। গত দুই দিন (শুক্র-শনিবার) আমরা ছিলাম না। তা না হলে শিল্পী সমিতির নির্বাচনের দিনই বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যেত।

‘যেটা বলতে চাচ্ছি, নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে একটা পত্র দেয়া হয়েছিল আমাদের, যেন শিল্পী সমিতির নির্বাচন বিএফডিসির ভেতরে করা যায়, তার অনুমতির জন্য। আমি নির্বাচন কমিশনারকে অনুরোধ করেছিলাম, কোভিড সিচুয়েশনে নির্বাচনটা না করা গেলে ভালো। তাছাড়া আমাদের এখানে একটা বিল্ডিং হচ্ছে, বিএফডিসির অর্ধেক জায়গা সেখানে চলে গেছে। বাকি জায়গাটার মধ্যে ইলেকশন করতে গেলে কোভিডের সময় সমস্যা হবে।’কিন্তু নির্বাচন কমিশন এফডিসিতে জানান যে যেহেতু শিল্পী সমিতির নির্বাচন, শিল্পীরা এফডিসিতে বেশি কমফোরটেবল হবেন।‘ওনার অনুরোধের কারণে আমরা অনুমতি দিয়েছিলাম। কোভিডসংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে যেসব সার্কুলার জারি হয়েছে সেগুলোর কথাও উল্লেখ ছিল অনুমতিতে। সাবধানতার জন্য কিছু শর্ত দিয়ে তাদের এখানে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়া হয়। আমরা ২০ তারিখের চিঠিতে প্রজ্ঞাপনের তারিখ ও নম্বরসহ উল্লেখ করে দিয়েছিলাম।’

২১ জানুয়ারি আরেকটি সার্কুলার দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। যেখানে জানানো হয় ১০০ জনের বেশি জমায়েত হবে না। এটা জানার পর এমডি ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচন কমিশনারকে ফোন করেন এবং প্রজ্ঞাপনটি ফলো করতে বলেন।

নুজহাত ইয়াসমিন বলেন, ‘এরপর আমরা ওই বিষয়টা মাথায় রেখে অনেকগুলো শর্ত দিই। আমরা জানতে পারি ভোটার সংখ্যা ৪২৮। ১০০ জনের সঙ্গে তুলনা করলে ৪২৮ জন অনেক বেশি। আর শুধু ভোটার দিয়েই তো হবে না, ভোটসংশ্লিষ্ট আরও অনেকেই থাকবেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন। তাই আমরা শর্তে বলেছিলাম ভোটার এবং ভোট কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্তরাই প্রবেশ করবেন।

নুজহাত আরও বলেন, ‘নির্বাচন ছিল শুক্রবার, ওই দিন অন্য কারও প্রবেশ করারও তেমন প্রয়োজন হয় না। তাই আমরা বলেছি, ভোটার এবং ভোটারসংশ্লিষ্টরা আসবেন এবং রেজিস্ট্রিকৃত মিডিয়া যারা আছে তারা আসবে। এগুলো নির্বাচন কমিশনার নিজেই ঠিক করে নেবেন, কে আসবে।’

এরপর এফডিসিতে থাকা বিভিন্ন সমিতির সদস্যরা এমডির কাছে আবেদন করেছিলেন যে সমিতির পাসধারীরা যেন ঢুকতে পারেন।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বলেন, ‘সমিতিতে হাজার হাজার পাসধারী আছেন। এত মানুষকে তো আর ঢুকতে দেয়ার সুযোগ নেই।’

এমডি জানান, মন্ত্রিপরিষদের প্রজ্ঞাপন মাথায় রেখে নির্বাচনের ভেন্যু দিয়েছেন তারা। আর ভেন্যুর অনুমতি ছাড়া অন্য কোনো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্তরা নেই এফডিসির।

১৭ সংগঠনের নেতাদের দাবির কথা জানতে পেরেছেন নুজহাত ইয়াসমিন।

তিনি বলেন, ‘ওনারা যেটা বলছেন বিভিন্নভাবে আমি সেটা শুনেছি। কিছু মানুষ হয়তো আসতে পারতেন। এটা যদি নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতো, তাহলে ওনারা নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে কার্ড ইস্যু করে সেটা করতে পারতেন। এখানে এফডিসির কোনো ভূমিকা নাই।’

আন্দোলনকারীরা ধীরে ধীরে এমডির অপসারণের দাবি সরকারের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে জানাবেন বলে জানান প্রযোজক-পরিচালক মো. ইকবাল।

Leave A Reply

Your email address will not be published.