প্রেমিকাকে হত্যা করে পোড়ানোর ঘটনায় প্রেমিক গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের রাঙামাটিতে প্রেমিকাকে হত্যা করে পোড়ানোর ঘটনায় প্রেমিক গ্রেপ্তার
রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে প্রেমিকা হাছিনা বেগম সুমীকে হত্যা করে মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় প্রেমিক মাহিবুর কামালকে (২৩) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭। গ্রেপ্তার মাহিবুর কাপ্তাই উপজেলার মুরগী টিলার মো. মনির উদ্দীনের ছেলে।
গত শনিবার (১৯ মার্চ) বিকাল ৪টায় নেত্রকোনা জেলার মদন থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ রবিবার (২০ মার্চ) র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-৭ এর অধিনায়ক এমএ ইউসুফ।
তিনি জানান, নিহত হাছিনা বেগম সুমী ও তার স্বামী ইমাম উদ্দীনের ১২ বছর আগে বিয়ে হয়। তারা ১০ বছরের একটি কন্যা সন্তান দত্তক নিয়ে লালন-পালন করে আসছিল। গত ১১ মার্চ রাঙ্গুনিয়া থানার দোভাষী বাজার এলাকায় গিয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে নিহত সুমীর মা আমেনা বেগম তার অনেক খোঁজাখুঁজি করে। তার মোবাইলে ফোন করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন ১২ মার্চ বিকাল সাড়ে ৫টায় সুমীর মা জানতে পারেন, কাপ্তাইয়ের বিএফআইডিসি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উত্তর পার্শ্বের পরিত্যাক্ত টয়লেটের ভেতর থেকে অজ্ঞাতনামা মহিলার লাশ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে তিনি গিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম করে দাহ্য পদার্থ দ্বারা আগুন দিয়ে বিকৃত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পান। এটি তার মেয়ে সুমীর লাশ বলে শনাক্ত করেন তিনি। এ ঘটনায় আমেনা বেগম বাদী হয়ে কাপ্তাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর র্যাব এ ঘটনায় ছায়া তদন্ত শুরু করে। গতকাল শনিবার (১৯ মার্চ) র্যাব জানতে পারে, এ ঘটনার সাথে জড়িত মাহিবুর কামাল নেত্রকোনায় আত্মগোপন করে আছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে বিকাল ৪টায় নেত্রকোনা জেলার মদন থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহিবুর কামাল জানায়, তার সাথে নিহত সুমীর পরকিয়ার সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মাহিবুরের সাথে অন্য এক মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়। এ ঘটনা জেনে সুমী ১১ মার্চ মাহিবুরকে ফোন করে কাপ্তাই থানার বিএফআইডিসি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে আসতে বলে। পরে রাত মাহিবুল আসলে তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় সুমি। কিন্তু মাহিবুর সুমীকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় তাদের সম্পর্কের কথা এলাকায় জানিয়ে দেবে বলে। এক পর্যায়ে মাহিবুর রেগে সুমীর মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। ইটের আঘাত পেয়ে সুমী মাহিবুরের হাতে কামড় দেয়। এতে মাহিবুর আরও রেগে তার মাথায় উপর্যুপুরি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তার গায়ে দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন লাগিয়ে ও হত্যা সংক্রান্ত সকল আলামত নষ্ট করে চলে যায়।
গ্রেপ্তার মাহিবুরকে কাপ্তাই থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার।