চরফ্যাশনে ছাত্রীকে হাত-পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন
হাত, পা ও মুখ বেঁধে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মাদরাসার শিক্ষকসহ চারজন মিলে অমানুষিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ফরিদাবাদ লতিফিয়া দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. শাহাদাত হোসেন লোকমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে ভুক্তভোগীর পরিবার। তাৎক্ষণিক গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ফারজানা নামের ওই শিক্ষার্থীকে বরিশাল বেলভিউ মেডিক্যাল সার্ভিসেস (প্রা.) লি. এ উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ মে) চিকিৎসাশেষে ফারজানার বাবা মো. কালূ মাঝি গণমাধ্যম ও প্রশাসনের কাছে এমন অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, গত ১৮ মে রাত ১০টায় নুরাবাদ ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কালু মাঝির মেয়ে ফারজানা (১৭) কে তার নিজ বাড়ির কক্ষে আটকিয়ে এমন নির্যাতন করেছেন।
ভুক্তভোগী ফারজানা জানায়, মাদরাসার শিক্ষকের প্ররোচনায় তিন মাস পূর্বে চর মাদ্রাজ ইউনিয়ন ২ নম্বর ওয়ার্ডের খালেক মোল্লার ছেলে আকতার এর সাথে আমাকে বাল্যবিয়ে দেয়। বিয়ের সময় শর্ত ছিল আমার দাখিল পরীক্ষার পরে আমাকে উঠিয়ে দেওয়া হবে। হঠাৎ গত ১৮ মে রাত ১০টায় মাদরাসার শিক্ষক শাহাদাত হোসেন লোকমান, মাদরাসার আয়া রুমা, ঘটক আল আমিন ও স্বামী আকতার আমাদের বাড়িতে আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগে শিক্ষক শাহাদাত হোসেন লোকমান আমার সাথে কথা আছে বলে আমার বাবা-মাকে ঘর থেকে বের করে দেন। এরপর আমাকে একটি ঘরের মধ্যে আটকিয়ে শিক্ষক লোকমান ওই মুহূর্তে স্বামী আকতারের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি চলে যেতে চাপ প্রয়োগ করেন। আমি তাঁর হাতেপায়ে ধরে দাখিল পরীক্ষা পর্যান্ত অপেক্ষা করতে বলি। কিছুতেই তারা চারজন রাজি না হয়ে আমার হাত-পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়। নির্যাতনে আমার সমস্ত শরীর ক্ষতবিক্ষত করে এবং নিচের চারটি দাঁত পড়ে যায় ও বাম চোখ প্রচণ্ড জখম হয়। আমার চিৎকারে বাবা-মাসহ লোকজন এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ফারজানার বাবা কালু মাঝি বলেন, ঘটনার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য থানায় যাই। ওসি মহোদয় আমাদের অভিযোগ গ্রহণ করেন এবং দ্রুত উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন। পরদিন সকালে আমরা বরিশাল চলে যাই। এখন মামলার প্রস্তুতি চলছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা গরিব মানুষ। ক্ষমতার দাপটে আমার মেয়েকে যারা এমন অমানুষিক নির্যাতন করেছেন তাদের উপযুক্ত বিচার চাই।
অভিযোগের বিষয়ে মাদরাসা শিক্ষক শাহাদাত হোসেন লোকমান বলেন, আমরা ছেলেকে শুধু মেয়ের বাড়িতে দিয়ে এসেছি। এরপর কি হয়েছে কিছুই জানি না। আমি মেয়েকে কোনো নির্যাতন করিনি।
দুলারহাট থানার ওসি মোরাদ হোসেন বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত আছি। বর্তমানে আমি থানার বাইরে থাকায় বিস্তারিত বলতে পারছি না। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ‘