দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করুন : জেনেভায় তথ্যমন্ত্রী

0 163

জাতিসংঘের ‘কনভেনশন অন দ্য রাইটস অব পারসনস উইথ ডিজ্যাবিলিটিস’ বিষয়ক কমিটির ২৭তম অধিবেশনের দ্বিতীয় ও শেষ দিনের বাংলাদেশ পর্যালোচনায় বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

দেশের মাটিতে বসে যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়, বিদ্বেষ ছড়ায়, তাদের চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করার জন্য প্রবাসী জনগোষ্ঠী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জেনেভা সফররত তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

জেনেভায় স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মশিউর রহমানের রেস্তোরাঁ কারি হাউজে স্থানীয় বাংলাদেশ কমিউনিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী।

সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল জমাদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল খানের সঞ্চালনায় কমিউনিটি প্রতিনিধিদের মধ্যে মোজাম্মেল হক, পলাশ বড়ুয়া প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ বদলে গেছে। কয়েক বছর পর বিদেশ থেকে দেশে ফিরলে নিজের এলাকা আর সহজে চেনা যায় না। গ্রাম ও শহরের পার্থক্য প্রায় ঘুচে গেছে। কুঁড়েঘর, মেঠোপথ বা খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না। দেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেল। কিন্তু এ উন্নয়ন যাদের সহ্য হয় না, তাদের অনেকে বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও বিদ্বেষ ছড়ায়, নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও দেশপ্রেমিক প্রবাসীদের বলব, এদের চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষকে জানান।’

প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে যে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে এবং জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়ার আমলে যে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, হাজার হাজার সেনাসদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা ও নির্যাতন করা হয়েছে, সেই সত্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ও বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর কাছে তুলে ধরতে হবে। ২০১৩-১৪-১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধের নামে যেভাবে পেট্রোলবোমা ছুড়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, সে চিত্র তাদের জানাতে হবে।’

এর আগে বিকেলে জাতিসংঘের ‘কনভেনশন অন দ্য রাইটস অব পারসনস উইথ ডিজ্যাবিলিটিস’ বিষয়ক কমিটির ২৭তম অধিবেশনের দ্বিতীয় ও শেষ দিনের বাংলাদেশ পর্যালোচনায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশে প্রতিবন্ধী মানুষের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি প্ল্যান অব অ্যাকশন (২০১৮-২০২৫) বাস্তবায়ন করছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আশা ও আনন্দের বিষয়, প্রধানমন্ত্রী তনয়া ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রী সায়মা ওয়াজেদ প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিকদের চিকিৎসা, সেবা, শিক্ষা ও তাদের জীবন উন্নয়ন গবেষণায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে ভূমিকা নিয়েছেন, তার ফলে তারা আজ আর সমজের বোঝা নয়, বরং তাদের পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে। অলিম্পিক গেমসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট ও দেশের বিভিন্ন অঙ্গনে তারা বহু পুরস্কার অর্জন করে দেশ ও দশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।’

‘প্রতিবন্ধীদের মৌলিক চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান, বিচারিক সুবিধা ও নির্যাতন থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সরকার তাদের মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করছে,’ যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায়ও তাদের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রতিবন্ধীবান্ধব আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে, ডিজ্যাবিলিটিস ডেটাবেজের মাধ্যমে তাদের ত্রাণ ও অন্যান্য সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ‘বৈষম্য প্রতিরোধ আইন ২০২২’-এর একটি খসড়া জাতীয় সংসদের বিবেচনাধীন রয়েছে বলেও অধিবেশনে উল্লেখ করেন ড. হাছান।

জেনেভায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মো. মুস্তাফিজুর রহমান, সমাজকল্যাণ সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, জাতিসংঘে দেশের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি সঞ্চিতা হক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মন্ত্রীর সঙ্গে অধিবেশনে যোগ দেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.