অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারী ভারতে গ্রেফতার

0 205

কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স উত্তরপ্রদেশ থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। অভিজিৎ রায়ের খুনে তিনি যুক্ত ছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর থেকে হাসনাত শেখ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি আল কায়দার ভারতীয় চ্যাপ্টারের সক্রিয় সদস্য বলে দাবি কলকাতা পুলিশের। মালদার বাসিন্দা হাসনাত বেশ কিছু দিন ধরে সাহারানপুরে গা ঢাকা দিয়ে ছিল বলে পুলিশের দাবি।
কলকাতা পুলিশ জানায়, বাংলাদেশের ব্লগার অভিজিৎ রায় খুনের ঘটনাতেও অন্যতম অভিযুক্ত এই হাসনাত। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে।

তবে ব্লগার অভিজিৎ রায়ের হত্যার ঘটনায় হাসনাত জড়িত ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান অভিজিৎ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।

অভিযুক্ত ছয় আসামির মধ্যে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যূত মেজর জিয়াউল হক ওরফে জিয়া, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ ওরফে শামস, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। আর অপর আসামি উগ্রপন্থি ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত না থাকলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিজিৎ রায়কে ‘হত্যার প্ররোচনা দিয়েছিলেন’ বলে তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছিল।

রায় ঘোষণার দিন আদালতে উপস্থিত ছিল না জিয়া ও আকরাম। তাদের পলাতক ঘোষণা করেই মামলার রায় ঘোষণা হয়। প্রশ্ন হলো, অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় যাদের নাম আদালত ঘোষণা করেছে তার মধ্যে কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া হাসনাত শেখের নাম নেই। তাহলে কি হাসনাত শেখ আলাদা ব্যক্তি? না কি আকরাম অথবা জিয়ার আসল নাম হাসনাত। কলকাতা পুলিশ এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চায়নি।

কলকাতা পুলিশ জানায়, আল কায়দার ভারতীয় চ্যাপ্টারের সাথে যুক্ত সন্দেহে দীর্ঘদিন ধরেই হাসনাতের ওপর তারা নজর রাখছিল। মালদায় তার বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, তিনি উত্তরপ্রদেশে আছে। এরপর উত্তরপ্রদেশেও বেশ কিছুদিন হাসনাতকে অনুসরণ করা হয়। নিশ্চিত হওয়ার পরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে কলকাতায় নেয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশ নিশ্চিত, ব্লগার অভিজিৎ রায়ের হত্যার সাথে হাসনাত যুক্ত ছিল।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে নিয়ে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে অগ্রবাদী কায়দায় হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অভিজিৎ রায়। চাপাতির আঘাতে আঙুল হারান তার স্ত্রী। বাংলাদেশসহ পশ্চিমা বিশ্বেও ওই ঘটনা নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘রিওয়ার্ড ফর জাস্টিস’ অভিজিৎ রায়ের খুনিদের সম্পর্কে তথ্য পেতে এই পাঁচ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্রের ‘রিওয়ার্ড ফর জাস্টিস’ প্রোগ্রামের আওতায় অভিজিৎ রায়ের খুনিদের সম্পর্কে তথ্য পেতে এই পুরস্কার ঘোষণা করে। এই প্রথম বাংলাদেশে সংগঠিত কোনো অপরাধের সাথে সম্পৃক্তদের তথ্য পেতে এরকম উদ্যোগ নেয় অ্যামেরিকা।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.