মুন্সিগঞ্জে শাওনের মৃত্যু গুলিতে নয় মাথায় আঘাতে, দাবি পুলিশ সুপারের

0 174

মুন্সীগঞ্জে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে নিহত যুবদলকর্মী শহীদুল ইসলাম শাওনের মৃত্যু গুলিতে নয়, মাথায় আঘাতজনিত কারণে- এমনটাই দাবি করেছে পুলিশ। সেইসাথে পুলিশ বলছে, সেদিন আন্তঃকোন্দলে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে বিএনপি।

এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল-মামুন জানান, যুবদলকর্মীদের ছোড়া ইটে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা গেছেন শাওন। ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা রিপোর্টেও গুলির কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে মুন্সীগঞ্জ মুক্তারপুর পুরাতন ফেরিঘাট গোলচত্বরে সদর থানা বিএনপি ও মুন্সীগঞ্জ পৌর বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি অবৈধ অনির্ধারিত সমাবেশ ও ঝটিকা মিছিল বের করে। বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দলীয় আন্তঃকোন্দলের কারণে তাদের নিজেদের মধ্যে মারামারি শুরু হলে স্থানীয় জনমনে আতংকের সৃষ্টি হয় এবং যানচলাচলে বিঘ্ন ঘটে। একই সময়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা মুক্তারপুর ফেরিঘাটে আওয়ামী শ্রমিক লীগের অফিস ভাংচুর করতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে বিএনপি নেতাকর্মীরা মারমুখী হয়ে ওঠেন। এ সময় চারদিক থেকে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। ইটের আঘাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), সদর থানার ওসিসহ অন্তত ১৬ পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শর্টগানের রাবার কার্তুজ ও গ্যাসশেল নিক্ষেপ করে। বিএনপি নেতাকর্মীরা তিন-চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ ২৪ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, ওই দিনের ঘটনায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করাসহ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বাধা দেয়ার অভিযোগে পুলিশ ও পাবলিক বাদি হয়ে পৃথক দুটি মামলা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার দাবি করেন, যুবদলকর্মী শাওন বিএনপির অন্য এক কর্মীর পেছন থেকে ছুড়ে মারা ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় স্বজনরা তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ২২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল-মামুন বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নিহত শাওনের লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগে হস্তান্তর করে। ফরেনসিক বিভাগ নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে চূড়ান্ত মতামত দিতে ভিসেরা পরীক্ষা করে। তাতে মাথায় আঘাতজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলে মতামত দেয়া হয়। নিহত শাওনের মাথার পেছনে থেঁতলানো আঘাত রয়েছে বলে তাতে উল্লেখ রয়েছে। গানশুটের কোনো আঘাত নেই।

বিএনপি ও নিহতের পরিবারের দাবি, পুলিশের ছোড়া গুলি মাথায় লাগে শাওনের। পরে আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন ২২ সেপ্টেম্বর রাতে মারা যান তিনি।

গত ২১ সেপ্টেম্বর দুপুরে মুন্সিগঞ্জে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হন। সংঘর্ষে ৩৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় যুবদলকর্মী শাওন ও জাহাঙ্গীর নামে দুজনকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। পরদিন রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাওনের মৃত্যু হয়।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.