ফেসবুক লাইভে ৪ মাঝিকে খুনের লোমহর্ষক বর্ণনা রোহিঙ্গা যুবকের

0 281

অনলাইন ডেস্কঃ

কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক মাসে চার মাঝিকে খুনের বিষয়ে ফেসবুক লাইভে এসে লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন মোহাম্মদ হাশিম (২০) নামে এক যুবক। তিনি নিজেকে ‘ইসলামী মাহাজ’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য বলে দাবি করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, হাশিম নামের ওই রোহিঙ্গা যুবক একটি অস্ত্র নিয়ে ভিডিওতে এসে চার মাঝির মধ্যে কাকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছিল তার লোমহর্ষক বর্ণনা দিচ্ছেন।

জানা গেছে, আল ইয়াকিন, আরসা ও ইসলামি মাহাজসহ বিভিন্ন সংগঠনের নামে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে একের পর এক হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে সন্ত্রাসী গ্রুপ। এতে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সব সময় আতঙ্কে ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। ফেসবুক লাইভে ৪ মাঝিকে খুনের রোমহর্ষক বর্ণনায় ক্যাম্প জুড়ে নতুন করে আলোচনায় জন্ম দিয়েছে।

হাশিম লাইভে বলেন, তার মতো ২৫ জন যুবককে অস্ত্র দিয়েছে ইসলামী সংগঠন মাহাজ। যাদের কাজ ছিল হত্যার মিশন বাস্তবায়ন করা। যার জন্য তাদের দেয়া হতো মোটা অংকের টাকা। তাদের মূল কাজ ছিল যারা প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করে, তাদের হত্যা করা। সম্প্রতি পাঁচ ছয় দিনের মধ্যে তিন মাঝিসহ এই স্বেচ্ছাসেবককে হত্যা করার কথাও জানান তিনি।

লাইভে খুনের শিকার মাঝিদের নামও বলেছেন ওই যুবক। তিনি বলেন, ১৮ নম্বর ক্যাম্পের হেড মাঝি জাফর, ৭ নম্বর ক্যাম্পের ইসমাঈল, কুতুপালং এক্সটেনশন ক্যাম্প-৪ এইচ ব্লকের এরশাদ ও হেড মাঝি আজিমুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে।

একইভাবে লাইভে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ ইসলামী মাহাজ সংগঠনের চার মুখপাত্রের নামও বলেন হাশিম। তারা হলেন জিম্মাদার সাহাব উদ্দিন, রহমত উল্লাহ, হেড মাঝি ভূঁইয়া, মৌলভী রফিক। এই চারজন এই সংগঠনের নেতৃত্ব দিতেন বলে জানান এই রোহিঙ্গা যুবক।

লাইভে হাশিম নিজের ভুল বুঝতে পেরে খারাপ জগৎ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চান জানিয়ে বলেন, তাদের সামনে আরো বড় মিশন ছিল।

এদিকে ওই লাইভ ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এই ভিডিও প্রচারের পর থেকে ক্যাম্পে মাঝিসহ নেতৃস্থানীয় রোহিঙ্গাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

গোয়েন্দা সংস্থার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ইসলামী মাহাজ নামে সংগঠনটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সব রকমের অপকর্ম করে থাকে। তারা ক্যাম্পে বড় ধরনের নাশকতা করে। তাদের আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, ভিডিওটি আমরা দেখেছি। এই যুবক যাদের নাম উল্লেখ করেছেন তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ক্যাম্পের নিরাপত্তায় সগোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.