নারায়ণগঞ্জে সন্তানকে হাত-পা বেঁধে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে মা আটক

0 211

অনলাইন ডেস্ক:

নারায়ণগঞ্জ শহরের বেপারী পাড়া মহল্লায় রেদোয়ার আহমেদ রাজু (১৪) নামে এক কিশোরকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে মাকে আটক করছে পুলিশ।

শনিবার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ওই কিশোরের মৃত্যুর পর রাতেই কিশোরের মা লিপি আক্তারকে আটক করে পুলিশ। কিশোর রাজু শহরের একটি স্কিন প্রিন্ট কারখানার কাজ করতো। কয়েক মাস আগে তার চাকরি চলে যায়। কয়েক বছর আগে রাজুর বাবা আনোয়ার ও মা লিপি আক্তারের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর থেকে সে তার মায়ের সাথে থাকতো।

স্বজনরা জানান, দেওভোগ বেপারিপাড়া এলাকার রাজমিস্ত্রী আনোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী লিপি বেগমের মধ্যে বিয়ের পর থেকেই কলহ চলছিল। দাম্পত্য জীবনে তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় গত দশ থেকে বারো বছর আগে লিপি বেগম তার স্বামীকে তালাক দেন। এরপর থেকে রাজু ও তার বড় ভাই মায়ের সাথে ভাড়া বাসায় থাকতো।

গত ১৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের ফ্ল্যাট থেকে কান্নার শব্দ ও আগুনের ধোঁয়া দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে যান। সেখানে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রাজুকে দগ্ধ ও বারান্দায় কাঁতরাতে দেখেন।

খবর পেয়ে রাজুর বাবা ও তার আত্মীয়-স্বজনরা দগ্ধ রাজুকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেন। দীর্ঘ পাঁচ দিন সেখানে তার চিকিৎসা চলে। শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজুর মৃত্যু হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। রাজুর মাকে আটক করে পুলিশকে খবর দেন তারা। পরে সদর থানা পুলিশ সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে রাজুর মা লিপি বেগমকে আটক করে।

তবে রাজুর মায়ের পরিবারের দাবি, রাজু নিজের গায়ে নিজেই কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছে

নিহত রাজুর খালা মিনু বেগম বলেন, গত তিন দিন আগে আমার বাবা মারা গেছেন। আমরা সবাই শোকে পাথর হয়ে গেছি। ঘটনার রাতে রাজু ম্যাচ ও কেরোসিন তেল নিয়ে বারান্দায় যায়। এরপর তিনি পাশের রুম থেকে রাজুর চিৎকার শুনতে পান।

তিনি দাবি করেন, কারখানার চাকরি চলে যাওয়ায় মা বকাঝকা করায় রাজু আত্মহত্যার উদ্দেশে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে আত্মহত্যার চেষ্টার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন।

এ ঘটনায় ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার দাবি করে সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রাজুর বাবা আনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, আমার ছেলেকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। তার মায়ের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লা বলেন, ছেলেটির মাকে আটক করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদসহ তদন্ত চলছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.