বিয়ের পর সবাইকে অচেতন করে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট নতুন বউয়ের

বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে নতুন বউয়ের যত্নআত্তির অন্ত ছিল না। নতুন বউকে নিয়ে বাড়িতে ছিল নানা আয়োজন। সেসব আয়োজনেও প্রাণোচ্ছল ছিলেন নতুন বউ। এত সব আয়োজন সেরে দ্বিতীয় রাতে নতুন বউকে নিয়ে একসঙ্গে রাতের খাবারও সেরেছেন সবাই। আর এতেই ঘটেছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি। ওই খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মেশানোয় সবাই যখন ঘুমে অচেতন, তখন নতুন বউ বাড়ির সব গয়নাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট দিয়েছেন।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের গজিয়াবাদ এলাকায়। ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ডলি কি ডোলি’ ছবির এই কাহিনি যেন বাস্তবে ঘটেছে সতপল শর্মা নামের এক নতুন বরের জীবনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৮ বছরের সতপল শর্মা ৪ এপ্রিল গজিয়াবাদের একটি মন্দিরে পূজা নামের এক মেয়েকে বিয়ে করে বাড়িতে এনেছিলেন। এই পূজাই স্বামীর বাড়ির সবাইকে অচেতন করে সব গয়না ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে পালিয়েছেন।
সতপলের ভাই শ্রাবণ বলেন, তিন ভাইয়ের মধ্যে সতপল বড় হলেও অবিবাহিত ছিলেন। পিলখুয়া এলাকার মহারাজ নামের এক ব্যক্তি তাঁর বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন। পরে সতপল ওই মেয়েকে দেখে পছন্দ করায় ৪ এপ্রিল মন্দিরে তাঁদের বিয়ে হয়। পূজা জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা-মা নেই। শুধু এক ভাই আছেন। তাই তিনি মন্দিরে খুব ছোট্ট আয়োজনে বিয়েটা সেরে ফেলতে চান। মন্দিরে পূজার ভাই উপস্থিত ছিলেন।
সতপলের ছোট ভাইয়ের বউ রিঙ্কি শর্মা বলেন, ‘সতপল-পূজার বিয়েতে আমরা খুব খুশি ছিলাম। ফুলশয্যার আগে তাঁকে নিয়ে বাড়িতে বেশ আনন্দ-হইচই হয়েছে। পরদিন রাতে সতপলের সঙ্গে না থেকে সে আমার সঙ্গে থাকতে চায়। আমি বিব্রতবোধ করলেও তাঁকে রাতে থাকতে দিই। মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে গেলে দেখি পূজা ঘরে নেই। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে দেখি আলমারি ও সিন্দুকে রাখা গয়না এবং মূল্যবান জিনিসপত্র সব খোয়া গেছে। রাতে বাড়ির বড়দের কথা অমান্য করে সে সবার জন্য খাবারও তৈরি করেছিল।’
শ্রাবণ বলেন, ‘রাতের খাবার পূজা তৈরি করেছিলেন। আমার বাবা ও সতপল ওই খাবার খেয়েছিলেন। আমাদের ধারণা, পূজা ওই খাবারে চেতনানাশক মিশিয়েছিলেন। কারণ সকাল পেরিয়ে গেলেও বাবা ও সতপলের ঘুম ভাঙছিল না। সম্ভবত, পূজাই ওই গয়না ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়েছেন।’
সতপলের পরিবার ঘটক মহারাজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। কিন্তু তাঁর ফোন এখনো বন্ধ।
মুরাদনগর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হরিদয়াল যাদব বলেন, ‘সতপলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা বিয়ের ওই মধ্যস্থতাকারী (মহারাজ) ও নতুন বউ পূজার খোঁজ করছি। আমাদের ধারণা, এঁরা একটি চক্র। এভাবে বিয়ের কথা বলে মানুষের সঙ্গে তারা প্রতারণা করে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে।