দৌড়ঝাঁপ অর্ধডজন নেতার
অনলাইন ডেস্ক:
চট্টগ্রাম-৮ আসনের (বোয়ালখালী, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ) সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের মৃত্যুর পর এখনো উপ-নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু করেনি নির্বাচন কমিশন। তবে এরিমধ্যেই প্রার্থিতার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের অন্তত অর্ধডজন নেতা। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম ও মোছলেমপত্নী শিরিন আহমদের নাম বেশি শোনা যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান পূর্বকোণকে বলেন, ‘৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার জন্য আইনি বিধান রয়েছে। আসন শূন্য ঘোষণা করার পর উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন নির্বাচন কমিশন।’ মোছলেম উদ্দিনের মৃত্যুর শোক কাটাতে না কাটাতেই শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতার তোড়জোড়।
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম ও মোছলেমপত্নী শিরিন আহমদের নাম এছাড়াও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এসএম আবুল কালাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার এসএম কফিল উদ্দিন, শিল্পপতি-ব্যবসায়ী সুকুমার চৌধুরী, বিজিএমই’র সাবেক সহ-সভাপতি ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের সভাপতি এসএম আবু তৈয়ব, সাবেক সংসদ সদস্য মঈনউদ্দিন খান বাদলের স্ত্রী সেলিনা খানের নামও শোনা যাচ্ছে। বাদলের মৃত্যুর পরও তিনি মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মহাজোট প্রার্থী জাসদের মঈনউদ্দিন খান বাদল। ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুর পর এই আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি উপ-নির্বাচনে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাত পৌনে একটার দিকে মারা যান তিনি।
চট্টগ্রাম-৮ আসনে দ্বিতীয়বারের মতো উপ-নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। বিএনপি এই সরকারের অধীনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলনে মাঠে রয়েছে। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতিমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন- তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা ও হিসাব-নিকাশ।
মনোনয়নপ্রত্যাশী নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন গতকাল পূর্বকোণকে বলেন, ‘এই আসনের ৬৫ শতাংশ ভোটার নগরে। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র পদে দায়িত্ব পালনকালে জনগণের কাছাকাছি থাকার সুযোগ হয়েছে আমার। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে আমার। দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি চাইলে নির্বাচন করবো।’
মোছলেম উদ্দিনের স্ত্রী শিরিন আহমদ ‘৭০-এর দশকে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে পা রাখেন। পরবর্তীসময়ে লালখান বাজার ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নগর মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন তিনি। তিনিও এখন দলীয় মনোনয়ন চাইবেন।
শিরিন আকতার বলেন, ‘তাঁর (মোছলেম উদ্দিন) ছায়াসঙ্গী হিসেবে দলীয় নেতা-কর্মী ও মানুষের সঙ্গে ছিলাম। এখন মোছলেম উদ্দিনের অসমাপ্ত কাজ শেষ করা ও তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দলের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবো।’
সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ‘২০০৮ ও ২০১৪ সালে নেত্রী আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিলেন। পরে নেত্রীর নির্দেশনায় মহাজোট প্রার্থী বাদলকে ছেড়ে দিই। তবে চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য নেত্রী আমাকে সিডিএ চেয়ারম্যান করেছিলেন। এবারও নির্বাচন করার প্রস্তুতি রয়েছে। তবে এ বিষয়ে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তাঁর নির্দেশনা পেলে নির্বাচন করবো।’
মনোনয়নপ্রত্যাশী এসএম আবুল কালাম বলেন, ‘১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে দলের দুর্দিনে নির্বাচন করেছিলাম। এবার মনোনয়ন পাওয়ার দাবি রাখি।’
ব্যবসায়ী নেতা এসএম আবু তৈয়ব বলেন, ‘রাজনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষের জন্য কাছ করে যাচ্ছি। বোয়ালখালীবাসীর প্রত্যাশিত ও কাক্ষিত উন্নয়নের লক্ষ্যে মনোনয়ন চাইব। নেত্রী বিবেচনা করলেই নির্বাচন করবো।’