রমজানে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমের দাম বাড়বে না : প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক:
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকার ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র বসাবে। এ কারণে মাছ, মাংস, দুধ, ডিমের দাম কোনোভাবেই বাড়বে না।
আজ শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র–সংলগ্ন মাঠে দুই দিনব্যাপী প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘রমজানের সময় আমরা ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করব। সে ক্ষেত্রে বেসরকারি যাঁরা খামারি আছেন, তাঁদেরও আমরা সহায়তা নেব। আশা করি, রমজানে মাছ, মাংস, দুধ, ডিমের দাম কোনোভাবেই বাড়বে না। বরং সহনশীলতার ভেতরে যেন রাখা যায়, সেই প্রক্রিয়ায় আমরা আছি।’
এখন বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ডিম, মাছ, মাংস দুধের দামও বাড়তি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তালিকা অনুসারে গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২০৫ থেকে ২২০ টাকা। এক বছর আগে এই দাম ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। দেশি মুরগির দাম ৪৫০ থেকে ৫৫১ টাকা। এক বছর আগের দাম ছিল ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা। গরুর মাংসের দাম ৭০০ থেকে ৭৩০ টাকা। এক বছর আগে এই দাম ছিল ৬০০ থেকে ৬২০ টাকা। সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে খাসির মাংসের দাম এক হাজার থেকে ১১০০ টাকা। এক বছর আগে এই দাম ছিল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। রুই মাছের দাম ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। এক বছর আগের দাম ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধের দাম ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। এক বছর আগে এই দাম ছিল ৫৮০ থেকে ৬২০ টাকা। ডিমের দাম হালিতে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। এক বছর আগে এই দাম ছিল ৩৬ থেকে ৪০ টাকা।
মাংসের দাম বাড়ার কারণ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ খাতের খাদ্য উৎপাদনের জন্য বিদেশ থেকে পণ্য আনতে হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্য উৎপাদনের ব্যয় বেড়েছে।’
শুধু খাদ্যের কারণে রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি কতটা যৌক্তিক? এমন প্রশ্নের জবাবে শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের জায়গা থেকে যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র ইতোমধ্যে স্থাপন করেছি, সেখানে কিন্তু আমরা সহনীয় পর্যায়ের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম। রমজানের সময়ও আমরা সেই পর্যায়ে যাব। পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনসহ সবাইকে অনুরোধ করব, কম লাভ করে সবাই যেন এসব খাবার খেতে পারেন, তাঁদের সক্ষমতার ভেতরে মূল্য নির্ধারণ করার জন্য।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব পরিস্থিতি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে, পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার কারণে পোলট্রি অ্যানিমেল ফিডের যেসব উপকরণ বিদেশ থেকে আনতে হয়, সেসব আনার ক্ষেত্রে অনেক প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এসবের কারণে খাদ্যের দাম বেড়েছে। দেশের ভেতরে যাতে বিকল্প খাদ্য তৈরি করা যায়, সে জন্য সাভারে নতুন একটা কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। মানুষ যাতে বিদেশমুখী না হয়, সে জন্য বাংলাদেশেই মিশ্র খাদ্য তৈরি হবে। এর ফলে খাবারের অজুহাতে উৎপাদনকারীরা দাম বাড়াতে পারবে না।’
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল কাইয়ূম, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক প্রমুখ।
প্রাণিসম্পদের এই প্রদর্শনীর আয়োজনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ), বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)।