এবার সাহাবীদের (রাঃ) নিয়ে সিনেমা বানানোর দুঃসাহস প্রকাশ, আলেম সমাজের ক্ষোভ
আজ পর্যন্ত এদেশের কেউ যে সাহস করেনি সেই সাহস করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন এদেশের বহুল আলোচিত নায়ক অনন্ত জলিল। জলিল এবার সাহাবায়ে কেরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগনদের নিয়ে সিনেমা তৈরি করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল জানিয়েছেন, সহসাই তিনি চলচ্চিত্র ছেড়ে দিচ্ছেন না। বরং একই সাথে ধর্ম চর্চা এবং চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে চান। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজনে ‘বাংলাদেশ নাইট’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অনন্ত জলিল। ধর্ম চর্চা ও প্রচারে মনোনিবেশ করে সম্প্রতি আলোচিত এই চিত্রনায়ক জানান, তিনি সাহাবায়ে কেরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগনদের জীবনী নিয়ে শিগগিরই একটি সিনেমা তৈরি করবেন।অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছ থেকে দূরে যেতে চাই না। এবং ইসলামি ভাবধারায়ও চলতে চাই। তাই আমার পরিকল্পনা হলো সাহাবায়ে কেরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগনদের নিয়ে একটি ফিল্ম আপনাদেরকে উপহার দেব। এটা ইতিহাস হয়ে থাকবে।’
বাংলাদেশের অবহেলিত শিশুদের সাহায্যের লক্ষ্যে তৃতীয়বারের মতো ‘বাংলাদেশ নাইট’ কনসার্টের আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘লিসেন ফর’। অনুষ্ঠানে নিজের জনপ্রীয় সব ডায়ালগ আর অভিনয়ের মঞ্চায়নে দর্শক মাতিয়ে তোলেন নায়ক অনন্ত জলিল।
এদিকে নবী রাসুল আলাইহিমুস সালাম এবং সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমদের নিয়ে নাটক সিনেমা বানানো ও প্রচারের এই খবরের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসলামী চিন্তাবিদগনেরা।
মুফতি মিজানুর রহমান সাইদ বলেনঃ কুরআন শরীফ ও হাদিস শরীফ অনুযায়ী নবী রাসুল আলাইহিমুস সালাম এবং সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগনের জীবন চরিত চিত্রনাট্যে কল্পিত ভাবনায় উপস্থাপন করা বা দেখা বৈধ নয়। এটা সম্পূর্ণ শরিয়ত পরিপন্থি। এটার প্রদর্শক ও দর্শক উভয়েই বড় ধরনের গুনাহের সম্মুখিন হবে। সুতরাং এ সিনেমা বানানো, সিনেমা প্রদর্শন বা দেখা পরিহার করা জরুরি।
তিনি আরো বলেন, নবী রাসুল আলাইহিমুস সালাম এবং সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগনের জীবনে ঘটে যাওয়া বিবাহ বন্ধনের স্পর্শকাতর দুর্লভ ঘটনাকে প্রেম কাহিনীতে রূপায়ন করা এটাও জঘন্য কাজ। এগুলো শিয়াদের তৈরি। আর শিয়া সম্প্রদায় ইসলামের সূচনাকাল থেকে আজ অবধি ইসলামের ক্ষতি করে যাচ্ছে। সুতরাং এগুলো মুসলমানদের জন্য অবশ্য পরিহার্য্য। তাছাড়া নবী রাসুল আলাইহিমুস সালাম এবং সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগনের জীবনী ও রূপ হুবহু কাল্পনিকভাবে উপস্থাপন করাও সম্ভব না। বরং এতে ইসলাম ও নবী জীবনের ভয়াবহ অবমাননা হচ্ছে। যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ।
মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ বলেনঃ নবী রাসুল আলাইহিমুস সালাম এবং সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগনের জীবন চরিত চিত্রনাট্যে কল্পিত ভাবনায় উপস্থাপন করা বা দেখা হারাম। নিশ্চয় একটা কাহিনীকে যখন নাট্যমঞ্চে উপস্থাপন করা হয় তখন মূল কাহিনীকে বিভিন্ন কল্পিত রঙ দিয়ে বাড়িয়ে কমিয়ে দৃষ্টিনন্দন করে উস্থাপন করা হয়। যা মূল চরিত্রের সঙ্গে কোনো মিল থাকে না। সে ক্ষেত্রে নবী রাসুল আলাইহিমুস সালাম এবং সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগনের জীবনী মন মাতানো ডিজাইনে বাড়িয়ে কমিয়ে উপস্থাপন করা মানে হচ্ছে, নবী রাসুল আলাইহিমুস সালাম এবং সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগনের উপর অপবাদ দেওয়া। ইসলামের অবমাননা করা। আর এটা সম্পূর্ণ অনধিকার চর্চা ও হারাম।
তিনি আরো বলেন, নবী রাসুল আলাইহিমুস সালাম এবং সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগনের চরিত্র বা তাদের সন্মানিতা স্ত্রীদের চরিত্র বিকৃতি করা, চেহারা প্রদর্শন করা হারাম।এটা ইসলামি বিশ্বের অভিভাবক সমতুল্য ওআইসির ফিকহি বোর্ডেও হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশে সম্প্রচারিত কথিত ইসলামি ইতিহাস নির্ভর সিনেমাগুলো দেখা ও দেখানো সম্পূর্ণ হারাম।