২০২৩ ব্যালন ডি’অর জিততে পারেন যে ৫ ফুটবলার
অনলাইন ডেস্ক:
ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিগত পুরস্কার হচ্ছে ব্যালন ডি’অর। চমৎকার এ খেলার সেরা অর্জন হিসেবে লোভনীয় ওই খেতাব ইতিহাসের পাতায় একজন খেলোয়াড়কে অবিস্মরণীয় করে রাখে। খবর বাসস।
প্রতিবছর সারা বিশ্বের ক্রীড়ামোদিরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকা আবিষ্কারের জন্য। কারণ এ খেতাবে ভূষিত ফুটবলারকে পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যতিক্রমী ও প্রতিভাবান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এ কীর্তি একজন ফুটবলারের নিরলস প্রচেষ্টা ও একনিষ্ঠ সাধনার ফসল। যেটি অর্জনের মাধ্যমে তাকে কিংবদন্তি হিসেবে অমরত্ব দান করে। প্রতিবছর গণমাধ্যম প্রতিনিধি, জাতীয় দলের অধিনায়ক ও কোচদের ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচিত হয় বর্ষসেরা খেলোয়াড়। ফুটবলের বিশ্বখ্যাত ওয়েবসাইট গোল ডটকমের দৃষ্টিতে আসন্ন ২০২৩ ব্যালন ডি’অরের জন্য ফেভারিট পাঁচ ফুটবলার-
১. আর্লিং হালান্ড (ম্যানচেস্টার সিটি)
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপ জয়ের পর ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ট্রেবল হিসেবে মহাদেশীয় শিরোপা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের অপেক্ষায় রয়েছেন হালান্ড। ইতোমধ্যে গোলমেশিন হিসেবে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতার কিংবদন্তির আসনে স্থান করে নিয়েছেন তিনি।
প্রিমিয়ার লিগে ৩৬ গোল করে ইউরোপীয় গোল্ডেন বুট নিশ্চিত করে ফেলেছেন এ নরওয়েজিয়ান। ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে গোল করে সিটিকে শিরোপা এনে দিতে পারলে লিওনেল মেসিকে টপকে ২০২৩ সালের ব্যালন ডি’অর জিততে পারেন তিনি। ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতায় ৫২ ম্যাচে ৫২ গোল করেছেন হালান্ড। পাশাপাশি ৯ গোলের জোগান দিয়েছেন তিনি।
২. লিওনেল মেসি (প্যারিস সেন্ট জার্মেই)
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে শিরোপা এবং ব্যক্তিগতভাবে গোল্ডেন বল জয়ের মাধ্যমে রেকর্ড অষ্টম ব্যালন ডি’অর জয়ের অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠেছেন মেসি। তবে উল্লেখযোগ্য গোল সত্ত্বেও ঘরোয়া ফুটবল খুব একটা সুখকর ছিল না আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির।
পিএসজিকে লিগ ওয়ানের শিরোপা জয়ে ভূমিকা রাখলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে নিজ ক্লাবের ছিটকে পড়াটা ছিল তার জন্য হতাশার। এবারো হয়তো ব্যালন ডি’অর জয় করতে পারেন তিনি। তবে সেটি একেবারেই নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। এ মৌসুমে পিএসজির হয়ে সব প্রতিযোগিতায় ৪১ ম্যাচে ২১ গোল করেছেন ৩৫ বছর বয়সী তারকা। বিপরীতে সহায়তা করেছেন আরো ২০ গোলে।
৩. কিলিয়ান এম্ববাপ্পে (প্যারিস সেন্ট জার্মেই)
বায়ার্ন মিউনিখের কাছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলয় পরাজিত হওয়াটা এম্বাপ্পের প্রথম ব্যালন ডি’অর জয়ে কিছুটা অন্তরায় হিসেবে দেখা দিয়েছে। তবে ক্লাব ও দেশের হয়ে গোল করার দুর্দান্ত দক্ষতাই তার বর্ষসেরার খেতাব জয়ের জন্য যথেষ্ট।
এ মৌসুমে ক্লাব ও দেশের হয়ে ৫০টিরও বেশি গোল করেছেন ফরাসি স্ট্রাইকার। ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ থেকে তিনি জয় করে এনেছেন গোল্ডেন বুট। শুধু তাই নয়, আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের হয়ে হ্যাটট্রিকের বিরল এক কৃতিত্বও অর্জন করেছেন এমবাপ্পে। এছাড়া এ মৌসুমে পিএসজির হয়ে ৪৩ ম্যাচে অংশ নিয়ে ৪১ গোল করেছেন তিনি। পাশাপাশি সহায়তা করেছেন ১০ গোলে।
৪. কেভিন ডি ব্রুইনা (ম্যানচেস্টার সিটি)
সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে অসাধারণ খেলছেন কেভিন ডি ব্রুইনা। ২০২২-২৩ মৌসুমটি এর ব্যতিক্রম ছিল না। সিটির অনন্য এক আবিষ্কার তিনি। অসাধারণ পাস দেয়ার দক্ষতা এবং দলীয় লক্ষ্য অর্জনে ধারাবাহিক ভূমিকার মাধ্যমে সমর্থক-পন্ডিতদের বিস্মিত করে চলেছেন এ বেলজিয়ান।
ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতায় ৪৮ ম্যাচে ১০ গোল করেছেন ব্রুইনা। পাশাপাশি ৩১ গোলে সহায়তা করেছেন তিনি। প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপ জয়ী এ তারকা ২০২৩ ব্যালন ডি’অর জয়ের অন্যতম দাবিদার।
৫. ভিক্টর ওসিমেন (নাপোলি)
এই মৌসুমে নিজেকে দারুণভাবে এগিয়ে নিয়েছেন নাপোলির ভিক্টর ওসিমেন। নায়কোচিত পারফরমেন্সের মাধ্যমে এখন নিজেকে বিশ্বসেরা স্ট্রাইকারদের একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি।
লুসিয়ানো স্পালেত্তির দলের হয়ে দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের মাধ্যমে নাইজেরীয় এ আন্তর্জাতিক নাপোলিকে সিরি এ লিগের শিরোপা এনে দিয়েছেন। পাশাপাশি পৌঁছে দিয়েছেন উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে।
ওসিমেন হচ্ছেন একজন শক্তিশালী ও অ্যাথলেটিক স্ট্রাইকার। যিনি তার ওই সামর্থ্যকে মাঠে বল নিয়ন্ত্রণের সময় দারুণভাবে ব্যবহার করেছেন। তিনি একজন নিখুঁত ফিনিশার, যেকোনও মাঠে গোল করতে পারদর্শী।
নাপোলির হয়ে ২০২২-২৩ মৌসুমে সবধরনের প্রতিযোগিতায় ৩৮ ম্যাচে অংশ নিয়ে ৩০ গোল করেছেন ওসিমেন। পাশাপাশি ৫ গোলে সহায়তা করেছেন তিনি। ওই দক্ষতার মাধ্যমে ব্যালন ডি’অর জয়ের দাবিদারদের পাশে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এ তারকা। যদিও শেষ পর্যন্ত খেতাব জয় করতে পারবেন কিনা সেটা বলা কঠিন।