‘ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়’: কী করবেন, কী এড়িয়ে যাবেন
অনলাইন ডেস্ক:
আরব সাগরে সৃষ্ট ‘ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়’ এরই মধ্যে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে ভারত-পাকিস্তানের উপকূলে আঘাত হানতে চলেছে। ভারতের গুজরাটসহ ৫ রাজ্য ও পাকিস্তানের কয়েকটি প্রদেশে সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া বিভাগ। ঘূর্ণিঝড়ের সময় কী করা যাবে আর কী করা যাবে না তা নিয়ে এবার তালিকা প্রকাশ করল পাকিস্তানের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ। খবর ডন।
পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের সরকার এবং ডিফেন্স হাউজিং অথরিটি (ডিএইচএ) এর মতো কর্তৃপক্ষ ঘূর্ণিঝড়ের আগে, ঝড়কালীন এবং পরে কী করতে হবে তা টুইট করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে উপকূলীয় এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি সতর্কতামূলক নানা পদক্ষেপ নিয়েছে প্রতিবেশী দুই দেশের সরকার।
আবহাওয়াবিদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মীরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রকৃতি ও এর বিপদ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা রাখার পাশাপাশি ঝড় আঘাত আনার সময়ে করণীয় সম্পর্কে উপকূলের বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে যা ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় হতে পারে।
কী করা উচিত, কী করা যাবে না
ঘূর্ণিঝড়ের আগে ভুয়া খবর এড়িয়ে শান্ত থাকতে হবে। যোগাযোগ নিশ্চিতে মোবাইল ফোনে শতভাগ চার্জ দিয়ে রাখতে হবে। জরুরি প্রয়োজনে মেসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। আবহাওয়ার খবর জানতে টিভি, রেডিও এবং সংবাদমাধ্যম নজর রাখার কথা বলছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ।
বেসমেন্ট এবং নিচতলা থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র সরিয়ে রাখুন।
আপনার ছাদ থেকে আলগা জিনিসগুলোকে প্রবল বাতাসের তোড়ে উড়ে যাওয়া রোধ করতে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় আলো পেতে টর্চ এবং মোমবাতি মজুদ করুন।
ঝড়-বৃষ্টির আগে একসঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে গোবাদী পশুদের। বাড়ির প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে রাখতে হবে। যাতে প্রয়োজনে সঙ্গে সঙ্গে তা পাওয়া যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তৈরি রাখতে হবে ওষুধসহ যাবতীয় সরঞ্জাম। ওয়াটার প্রুফ ব্যাগে রাখতে হবে প্রয়োজনীয় নথিপত্র।
বন্যা, ঝড়, বৃষ্টির শুরু হলে বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। ড্রেন, কালভার্ট থেকে দূরে থাকতে হবে। একইসঙ্গে দুর্যোগের সময় দূরে থাকতে হবে বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ বৈদ্যুতিক তার থেকে।
দুর্যোগ চলাকালীন টাটকা খাবার বা শুকনো খাবার পরামর্শ দিচ্ছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। বাড়ির আশপাশের অঞ্চল পরিষ্কার রাখতে জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেটে গেলেও শিশুরা যাতে জমা পানিতে না খেলে তা খেয়াল রাখতে হবে। পুরনো, ভেঙে যাওয়া বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করার আগে অবশ্যই পরীক্ষা করতে হবে। ভেঙে যাওয়া ইলেক্ট্রিক পোল, তার কোথায় ভেঙে বা ছিঁড়ে পড়ে আছে তা দেখতে হবে।
বন্যায় ভেসে আসা কোনও খাবার খাওয়া যাবে না স্পষ্ট জানিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ। ম্যালেরিয়া থেকে বাঁচতে ব্যবহার করতে হবে মশারি। পানির লাইনে কোনও সমস্যা বা পাইপ ভেঙে গেলে সেই পাইপের সঙ্গে যুক্ত কল ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ বলছে দুর্যোগ পর্বে আসবাবসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস তুলে রাখা উচিত খাট এবং টেবিলের উপর। ড্রেনসহ উন্মুক্ত জায়গা ঢেকে দিতে হবে। প্রয়োজনে বন্ধ করে রাখতে হবে ইলেক্ট্রিক এবং গ্যাসের কানেকশন। পাকা বাড়ির ছাদের তলায় আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের। সঙ্গে রাখতে হবে ওষুধসহ প্রয়োজনীয় জিনিস। জমা পানিতে পা দেয়ার আগে গভীরতা বুঝতে ব্যবহার করতে হবে লাঠি। প্রশাসনের কথা মেনে চলতে হবে বলে সাফ জানিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ।