এই প্রথম নারী নেতৃত্বাধীন গবাদিপশুর হাট

0 222

অনলাইন ডেস্ক:

মহিলারা দীর্ঘদিন ধরে পশু পালনে নিযুক্ত থাকলেও বিক্রির প্রক্রিয়া থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়। তবে শীঘ্রই এই প্রবণতা পরিবর্তন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্রথম নারী বিক্রেতাদের দ্বারা পরিচালিত গবাদিপশুর একটি হাট  বসেছে। যেখানে আবার নারী ক্রেতাদের জন্যে থাকছে বিশেষ ছাড়।

গবাদিপশুর এই হাটের সংগঠক রুকাইয়া ফরিদ। তার নিজস্ব খামারের নামে এ হাটের নামকরণ করা হয়েছে ‘রুকাইয়া ফরিদ গবাদি পশুর বাজার’। পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর করাচির শাদমান টাউনে এই পশুর হাটটি বসেছে।

এ নিয়ে গালফ নিউজে একটি  প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। রুকাইয়া ফরিদ সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, ‘নারীদের জন্য এমন কোনো বাজার তৈরি করা হয়নি, যেখানে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে পশু বিক্রি করতে পারেন। বিশ্বে এই প্রথম নারীদের জন্য গরুর হাট বসানো হলো। এটি এমন নারীদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম যাদের বাড়িতে সহযোগিতার জন্য সক্ষম কোনো পুরুষ নেই। তাদের বাবা বা ভাই দেশের বাইরে থাকেন। তারা ত্যাগের সম্মান থেকে বঞ্চিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই বাজার সেই নারীদের জন্যও যারা গ্রামে সারা বছর পশুপালন করেন। কিন্তু এটি থেকে তারা নিজেরা সরাসরি উপকৃত হন না। উপকৃত হন তাদের স্বামী, বাবা বা ভাই। তাদের পশুও এখানে আনা হয়েছে।’

রুকাইয়া জানান, এই হাটে এমন কিছু বিক্রেতা আছেন, যারা বাড়ির ছাদে বা বাড়ির সামনের সবজি বাগানে পশু পালন করেন। কেউ কেউ আবার স্বামীর ব্যবসায় সহায়তা করছেন।

অন্যান্য হাটে অনেক ভিড় হলেও করাচির এই মহিলাদের নেতৃত্বাধীন গবাদি পশুর হাটটি মহিলা এবং পরিবার-বান্ধব। এ হাটে মূল আকর্ষণগুলির মধ্যে ছিল ‘বাবলু’ নামে একটি সুন্দর সাদা ষাঁড় এবং ‘লালি’ নামের একটি লাল গরু।

হীরা শামস নামের একজন ক্রেতা বলেন, নিজের পছন্দে কোরবানির পশু কিনতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। শুধু পুরুষ সদস্যরাই হাটে যেত বলে পূর্বে আমরা এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত ছিলাম। নারীদের পথ দেখাতে এটি একটি সতেজ পরিবর্তন।

আরেকজন ক্রেতা নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, প্রথম দিকে, বিক্রেতা ৫৫ হাজার টাকা চেয়েছিল, কিন্তু কিছু দর কষাকষির পরে, আমরা আমাদের পছন্দের ছাগলটি ৪০ হাজার টাকায় কিনতে পেরেছি।

কোরবানির পশুগুলো আসছে পাঞ্জাব এবং করাচি থেকে। প্রথমবার হওয়ায় অবশ্য বাজারে বিক্রেতার সংখ্যা কম- মাত্র ১০টি স্টল রয়েছে। সেখান থেকে নারী ক্রেতারা দর-কষাকষি করে পশু কিনছেন। ঈদকে সামনে রেখে কোরবানির পশু বাছাইয়ে নারী ক্রেতাদের জন্যে রয়েছে ছাড়ের ব্যবস্থাও।

খামারের মালিক রুকাইয়া ফরিদ বলেন, ‘আমরা খুব ন্যায্য দাম রাখছি। নারীরা এখানে বিশেষ ছাড় পাচ্ছেন।’

তিনি বলেন, বাজারের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তিনি সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জারসের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন ও সহযোগিতা পাচ্ছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.