বিয়ে করে-জমি দিয়ে জামিন পেলেন ধর্ষক
অনলাইন ডেস্ক:
স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর রাঙামাটির লংগদু উপজেলার করল্যাছড়ি আর এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমের যাবজ্জীবন সাজা হয়। রায়ে, বিচারক তার পর্যবেক্ষণে বলেন, “ছাত্রীকে ধর্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকতার মহান পেশাকে কলঙ্কিত করেছেন আসামি।”
এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন, অভিযুক্ত আবদুর রহিম। জানান, সেই শিক্ষার্থীকে বিয়ে করেছেন, তাই যে কোনো শর্তে জামিন চান তিনি। ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। রাষ্ট্রপক্ষও আদালতকে সাফ জানিয়ে দেন, এ ধরনের বিয়ের কোনো ভিত্তিই নেই। আর পুরো বিষয়টি জেনে আসতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
পরে রাষ্ট্রপক্ষ এক একর জমি ধর্ষিতা সেই নারীর নামে লিখে দেয়ার শর্তে, জামিন দেয়ার বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেন। সব শুনে হাইকোর্ট এক একর জমি লিখে দেয়ার শর্তেই জামিন দেন শিক্ষক আবদুর রহিমকে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, আদালত নির্দেশ দেন যে তাদেরকে জামানত স্বরূপ একটা কিছু দিতে হবে। তার প্রেক্ষিতে আসামি পক্ষ থেকে নগদ তিন লক্ষ টাকা ধর্ষিতা সেই নারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিয়ে রশিদ আদালতে দাখিলের মাধ্যমে জামিন পান শিক্ষক আবদুর রহিম।
বিচারপতি কুদ্দুস জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, যদি ধর্ষিতার সাথে কোনো অন্যায় আচরণ করা হয়, তবে সাথে সাথে বাতিল হবে জামিন।
সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, যেহেতু একটি মেয়ের এবং তার পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাই হয়েছে এবং রাঙ্গামাটির আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হইনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি ধর্ষিতার পরিবার। ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের ভেতরে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও মামলা না করতে হুমকি দেন আব্দুর রহিম। এর ৯ দিন পর, একই বছরের ৫ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে ধর্ষিতার পরিবার।