তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিকে কেন্দ্র করে দেশে আরেক দফা গ্যাসের দাম বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য দেশে এই প্রথমবারের মতো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা কর্মকর্তাদের মতে, দেশে উৎপাদিত গ্যাস স্থানীয় বাজারে বর্তমানে যে দামে বিক্রি হচ্ছে, এলএনজি আমদানির পর তা প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি করতে হবে। ফলে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার পর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনও (বিইআরসি) কাজ শুরু করেছে। কিছুদিন আগে পেট্রোবাংলা থেকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও বিসিআইসির চেয়ারম্যানকে জানানো হয়, এলএনজি আমদানির পর প্রতি ঘনমিটার গ্যাস গড়ে ১৩ টাকার কমে বিক্রি করা সম্ভব হবে না, যা বর্তমানে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের গড় মূল্য হার সাত টাকা ৩৫ পয়সা।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও গ্যাসের দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, এলএনজি এলে বিদ্যুৎসহ শিল্প ও বাণিজ্যিক সংযোগে মূল্য সমন্বয় করতে হবে। তবে আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রেও দাম বাড়ানো হবে কি না তা তিনি স্পষ্ট করেননি। তবে ঠিক কবে থেকে গ্যাসের দাম বাড়তে পারে, সেই বিষয়েও সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।
উল্লেখ্য গত বছর ফেব্রুয়ারিতে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিলো। তখন দাম বাড়ানোর পর বিদ্যুৎ খাতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ৩ টাকা ১৬ পয়সা, ক্যাপটিভ বিদ্যুতে ৯ টাকা ৬২৩ পয়সা, সার কারখানায় ২ টাকা ৭১ পয়সা, শিল্পে ৭ টাকা ৭৬ পয়সা এবং বাণিজ্যিকে ১৭ টাকা ৪০ পয়সায় দরে বিক্রি করা হচ্ছে। আবাসিক সংযোগে এক চুলার জন্য মাসে ৯০০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৯৫০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। এক বছরের মাথায় আবারও নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর অজুহাত এলএনজি আমদানি।
সূত্র মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এক্সিলারেট এনার্জি কোম্পানি কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে আসায় এপ্রিলের শেষে এলএনজি আমদানি শুরু করা যাবে বলে আশা করছে সরকার। এই এলএনজি টার্মিনাল থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সঞ্চালন লাইনে দেওয়া সম্ভব হবে।
গ্যাসের দাম এখন আবারও বাড়ানো হলে জীবনযাত্রার ব্যয় আরো এক দফা বাড়বে, যা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে ধারনা করা যায়।
তবে এ প্রসঙ্গে নসরুল হামিদ বলেন, কতটুকু প্রভাব পড়বে সেটাও আমরা গবেষণা করেছি। বাজার অস্থিতিশীল হবে না, সহনীয় পর্যায়েই থাকবে। তিনি বলেন, গ্যাস না থাকার যে মূল্য, সেটা অনেক বড়। তারা যদি উৎপাদন বাড়াতে পারে এবং এটা যদি সমন্বয় করতে পারে, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ যদি তারা পায়, তাহলে ব্যবসার উন্নতি হবে বলে আমি মনে করি। তখন এই খরচ মিনিমাম হয়ে যাবে।