পটিয়া পিটিআই নারী হোস্টেলে ভাংচুর!
যৌন হয়রানির অভিযোগে পটিয়া প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) চার প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম চলমান থাকাকালেই মঙ্গলবার গভীর রাতে নারীদের একটি হোস্টেলে ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এর প্রতিবাদে আজ বুধবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ করেছে আন্দোলনরত প্রশিক্ষণার্থীরা।
নাম প্রকাশ না করতে ইচ্ছুক রোকেয়া হলের নারী প্রশিক্ষণার্থীরা জানান , তিনজন লোক রাত আনুমানিক ১ টার দিকে প্রীতিলতা হোস্টেলে আসে। পরে তারা রোকেয়া হলের জানালা ভাংচুর করে ক্যাম্পাসের পূর্ব দিকে দেওয়াল টপকে চলে যায়। তারা চিৎকার করে বলছিল- হোস্টেল ভেঙে ফেল। ওদের হাতে লাঠি ছিল। পরে আমরা আমাদের পুরুষ সহকর্মীদের মুঠোফোনে বিষয়টি জানাই।
পটিয়া পিটিআইয়ের সুপারিন্টিডেন্ট (ভারপ্রাপ্ত) তপন কুমার দাশ জানান , এক নারী প্রশিক্ষণার্থী আমাকে রাত দেড় টার দিকে মোবাইলে কল দিয়ে বিষয়টি জানান। আমি রাত গভীর হওয়ায় প্রশাসন কিংবা থানাকে অবহিত করিনি। তবে সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে জানাই এবং থানায় লিখিত অভিযোগ করি।
পটিয়া থানার উপ-পরিদর্শক খালেদ জানান, ‘আমরা পিটিআই সুপারিন্টেডেন্টের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনরত প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে কথা বলি। পিটিআইয়ের নৈশ প্রহরী ও বাবুর্চিসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের পটিয়া পিটিআইয়ে চার প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে ও প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে চট্টগ্রামে নিজের বাসায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান পিটিআই প্রশিক্ষক (আইটি) দেবব্রত বড়ুয়া দেবু। দুদিন হাসপাতালে থেকে রোববার রাতে তিনি বাসায় ফেরেন। এ ঘটনায় আন্দোলন শুরু করেন প্রশিক্ষণার্থীরা। তাদের টানা দুইদিনের আন্দোলনের মুখে গত রোববার অভিযোগ ওঠা চার শিক্ষককে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। প্রত্যাহার হওয়া চার প্রশিক্ষক হলেন- ফারুক হোসেন (শারীরিক শিক্ষা), জসিম উদ্দীন (সাধারণ), রবিউল ইসলাম (আইসিটি) ও সবুজ কান্তি আচার্য্য (চারু ও কারুকলা)। গত সোমবার ও মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তদন্ত দলের প্রধান ও অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবু হাসান ছিদ্দিক পটিয়া পিটিআইয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জাবানবন্দি গ্রহণ করেন।
রিপোর্ট: কাউছার আলম, পটিয়া।