‘আসুন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উৎসর্গ করি নিজেদের’

0 149


জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে তার আদর্শ অনুসরণ করে মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করার আহ্বান এসেছে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের কাছ থেকে।

এই উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, “রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু ছিলেন নীতি ও আদর্শের প্রতীক।

“বঙ্গবন্ধু রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’সহ তার ওপর লিখিত গ্রন্থ অধ্যয়ন করে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে পারবে এবং তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আগামীতে জাতিগঠনে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।”

জাতির পিতার জন্মদিন জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে উদযাপনের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আসুন, দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব শিশুদের কল্যাণে আমরা বর্তমানকে উৎসর্গ করি। সবাই মিলে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।”

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্ম নিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান; যার হাত ধরে এসেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এই দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে দেশে উদযাপাপিত হয়।

এবার জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার তার সাড়ম্বর উদ্বোধনের কথা থাকলেও নভেল করেনাভাইরাস বিশ্বে মহামারী রূপ ধারণ করায় জনসমাগম এড়িয়ে সীমিত আয়োজনে হচ্ছে সেই অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামের বিষয়টি তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি । এজন্য তাকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে অমানুষিক নির্যাতন। কিন্তু বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে তিনি কখনো শাসকগোষ্ঠীর সাথে আপস করেননি।”

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার আদর্শ আমাদের চিরন্তন প্রেরণার উৎস।

“তার নীতি ও আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সাহসী, ত্যাগী ও আদর্শবাদী নেতৃত্ব, এ প্রত্যাশা করি।”

জন্মশতবার্ষিকীর বর্ণাঢ্য আয়োজন যথাযথ উৎসাহ ও উদ্দীপনার মাধ্যমে উদ্যাপনের জন্য দেশবাসী ও প্রবাসী বাঙালিদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপ্রধান।

“মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করাই হোক মুজিববর্ষে সকলের অঙ্গীকার।”

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, “জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার প্রত্যয়ে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
“সব শিশুর সমঅধিকার নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।”

শিশুর প্রতি সহিংস আচরণ এবং সব ধরনের নির্যাতন বন্ধ করার জন্যে এদিনে সবার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধুর ঘটনাবহুল সংগ্রামী জীবন স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এই বিশ্বনেতার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করা; ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও অশিক্ষার অন্ধকার থেকে মুক্ত করে উন্নত জীবন নিশ্চিত করা।”

বঙ্গবন্ধুন নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু যখন ‘সোনার বাংলা’ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী চক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতাকে পরিবারের প্রায় সব সদস্যসহ নৃশংসভাবে হত্যা করে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয় “

একুশ বছর পর ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার করার মধ্য দিয়ে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা আজ আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি।

“আওয়ামী লীগ সরকার প্রিয় মাতৃভূমিকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাস ভূমিতে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর।“

Leave A Reply

Your email address will not be published.