কৃষকের জন্য ৫০০০ কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা প্রধানমন্ত্রীর

0 187


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি খাতের ক্ষতি মোকাবিলায় কৃষকের জন্য ৫০০০ কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। সহজ শর্তে এ তহবিল থেকে মাত্র ৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন কৃষক।

আজ রোববার (১২ এপ্রিল) ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্যকালে তিনি এ প্রণোদনা ঘোষণা করেন। আজকে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের জেলাসমূহের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ‌্যস‌চিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠান পরিচালনা ক‌রেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনা বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে চাষিদের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিরা পাঁচ শতাংশ সুদে এ ঋণ নিতে পারবেন। এছাড়া সারের জন্য ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি, কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের জন্য ১০০ কোটি টাকা, বীজের জন্য ১৫০ কোটি টাকা এবং কৃষকদের জন্য আরও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, এ প্রণোদনা গ্রামাঞ্চলের ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের জন্য। যারা পোল্ট্রি, কৃষি ফার্ম, ফলমূল, মসলা জাতীয় খাদ্যপণ্য উৎপাদন করবেন তারা এখান থেকে ঋণ নিতে পারবেন।

কৃষকের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ কোনও জায়গা ফাঁকা রাখবেন না। একটু জায়গাও ফেলে রাখবেন না। যার যতটুকু জায়গা আছে সবটুকুতে চাষাবাদ করুন।’

তিনি বলেন, কৃষক যাতে ফসলের ন্যায্য দাম পায় সরকার সে বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে লক্ষ রাখবে। এ লক্ষ্যে এবার খাদ্য মন্ত্রণালয় দুই লাখ মেট্রিক টনের বেশি ধান-চাল ক্রয় করবে।

তিনি আরও বলেন, মজুরের অভাবে ধান কাটা যেন বন্ধ না হয়। বর্তমানে অনেক কৃষিশ্রমিক বেকার রয়েছেন। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত কৃষিশ্রমিক যাতে যেতে পারেন, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী ব‌লেন, কোনও ফসল যেন নষ্ট না হয়। উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে। হাটবাজার যাতে বন্ধ না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কোনও বড় জায়গায় সপ্তাহে একদিন হাট বসাবেন।

তিনি বলেন, কৃষিকাজ যেন অব্যাহত থাকে, কৃষি উৎপাদনের জন্য আমরা বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছি। এবার দুই লাখ মেট্রিক টন চাল কেনার কথা বলেছি। কৃষকরা যাতে ধানের ন্যায্য মূল্য পায় সেজন্য আমরা এই ব্যবস্থা করেছি।

তিনি বলেন, কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, আরও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে।

করোনাভাইরাস সম্পর্কে দেশবাসীকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি সংক্রামক। কখন সংক্রামিত হবে তা বোঝা খুব কষ্টকর। এটাই হচ্ছে এ ভাইরাস নিয়ে সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অদৃশ্য শক্তির মতো করোনাভাইরাস আমাদের ভেতরে হানা দিয়েছে। এ ভাইরাস শুধু একটি দেশ নয়, পৃথিবীর প্রতিটি দেশের মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আক্রান্ত হচ্ছে। এক লাখ তিন হাজারের মতো মানুষ ইতোমধ্যে মারা গেছেন এবং লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। বিভিন্ন উন্নত দেশ এটা মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কারণে যারা মারা গেছেন তাদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমরা সারাদেশে এ ভাইরাস মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছি। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু খুব কম থাকলেও এটা মানুষকে ভোগায় বেশি। এ ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য সব কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছি। সবাই ঘরে থাকুন। বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। জানি মানুষের কষ্ট হবে কিন্তু আমরা করণীয় করে যাচ্ছি। এজন্য আমরা ২৩টি নির্দেশনা তৈরি করেছে।

তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংবাদমাধ্যম অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে সচেতনতামূলক জিনিস প্রচার করছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.