বীর উত্তম সি আর দত্ত মারা গেছেন
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) চিত্তরঞ্জন দত্ত (সি আর দত্ত) বীর উত্তম মারা গেছেন।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত সি আর দত্তের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সৎকারের বিষয়ে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের পরিবারের ইচ্ছা মরদেহ বাংলাদেশে নিয়ে আসা। আমাদেরও ইচ্ছা, বাংলাদেশে আসুক। তার মরদেহ কীভাবে আসবে? কারণ এখন বিমানগুলো বন্ধ। আমরা চাই যে, বাংলাদেশেই তার সৎকারটা করা হোক। তবে বাংলাদেশের কোথায় তার সমাধি হবে, সেটা ঠিক করি নাই। এইমাত্র খবরটা পেলাম। তাছাড়া, মরদেহ আসতেও কিছুদিন সময় লাগবে। এর মধ্যে আমরা সবার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা ঠিক করব।
ফ্লোরিডা থেকে সি আর দত্তের মেয়ে কবিতা দাশগুপ্তা রাতে ফোনে গণমাধ্যমকে জানান, গত ২০ আগস্ট বৃহস্পতিবার তার বাসভবনের বাথরুমে হঠাৎ করে জেনারেল দত্ত পড়ে যান। এতে তার পা ভেঙে যায়। এরপর জেনারেল দত্তকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
চিত্তরঞ্জন দত্তের জন্ম ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি আসামের শিলংয়ে। তার পৈতৃক বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি গ্রামে। তার বাবার নাম উপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত এবং মায়ের নাম লাবণ্যপ্রভা দত্ত। শিলং-এর লাবান গভর্নমেন্ট হাইস্কুল -এ দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। এরপর বাবা চাকরি থেকে অবসর নিয়ে হবিগঞ্জে এসে স্থায়ী বসবাস শুরু করলে হবিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাইস্কুল থেকে ১৯৪৪ সালে তিনি মাধ্যমিক পাশ করেন। তারপর কলকাতার আশুতোষ কলেজে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হয়ে ছাত্রাবাসে থাকা শুরু করেন তিনি। খুলনার দৌলতপুর কলেজের বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হন। পরে এই কলেজ থেকেই বিএসসি পাশ করেন।
চিত্তরঞ্জন দত্ত ১৯৫১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কিছুদিন পর ‘সেকেন্ড লেফটেনেন্ট’ পদে কমিশন পান। ১৯৬৫ সালে সৈনিক জীবনে প্রথম যুদ্ধে লড়েন তিনি। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে পাকিস্তানের হয়ে আসালং এ একটা কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ করেন তিনি। এই যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পাকিস্তান সরকার তাকে পুরস্কৃত করে।