জরুরী অবস্থা ঘোষণা মিয়ানমারে
মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি, রাষ্ট্রপতি এবং জ্যেষ্ঠ নেতাদের আটক করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও আটক করে অজানা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলির রাস্তায় সেনা নেমেছে। সরকারি টিভি-তে সম্প্রচার বন্ধ। ইন্টারনেট পরিষেবার অবস্থাও খারাপ। রাত তিনটের পর থেকে তা ভালো করে কাজ করছে না।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী পরিচালিত টেলিভিশনে সম্প্রচার করা এক ভিডিও ভাষণে সেনাবাহিনীর সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইং জানিয়েছেন, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে অং সান সু চি, রাষ্ট্রপতি উইন মিনত এবং অন্য শীর্ষ নেতাদের ভোরে আটক করা হয় বলে জানান।
দেশের জরুরী অবস্থার ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র মায়ো নিউনত বলেন, ‘আমি আমাদের জনগণকে বলতে চাই যে তাড়াহুড়া করে সাড়া না দিতে এবং আমি চাই তারা আইন অনুযায়ী কাজ করবে।’
মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে সেনাবাহিনী। পাশাপাশি দেশটির বড় শহরগুলোতে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল এনএলডি বিজয় লাভ করে। তবে ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলে দেশটির সেনাবাহিনী। এবার সেই অভিযোগেই অভিযান চালিয়ে সু চিসহ এনএলডির শীর্ষ নেতাদের আটক করা হলো।
ওই নির্বাচনে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের ভোটারদের ভোট বঞ্চিত করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী থেকে সমালোচনা করা হয়। আর সেনাবাহিনী সমর্থিত বিরোধী জোট নির্বাচনে দাবি করে নির্বাচনে ৮ দশমিক ৬ মিলিয়ন ভোট জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।
সুচি নির্বাচিত হওয়ার পর দেশটিতে শুরু হয় নতুন তান্ডব। রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। যার প্রেক্ষিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অভিযোগ তোলে। বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী থেকে সমালোচনা করা হয়। সর্বশেষ আবারো সেনা অভ্যুূত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে সেনাবাহিনী। পাশাপাশি দেশটির বড় শহরগুলোতে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী।