মন্ত্রীদের বরখাস্তের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু মিয়ানমার সেনাবাহিনীর
ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়েছে মিয়ানমারে। ক্ষমতা দখলের প্রথমে দিনেই সেনাবাহিনী সু চি সরকারের অধিকাংশ মন্ত্রীকে বরখাস্ত করে নতুন লোক নিয়োগ দিয়েছে। নতুন মন্ত্রীদের অধিকাংশই জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং বিবিসি বার্মিজ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সু চি সরকারের অন্তত ২৪ জন মন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নতুন ১১ মন্ত্রীকে। নতুন মন্ত্রীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনই সেনাসমর্থিত দল ইউএসডিপির সদস্য।
জানা গেছে, ইউএসপিডির অন্যতম নেতা উনা মং লউন হয়েছেন মিয়ানমার জান্তা সরকারের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি গত নভেম্বরের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে জিততে পারেননি।
গত ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) পেয়ছিল ৮৩ শতাংশ আসন। ২০১১ সালে সামরিক শাসন শেষ হওয়ার পর দেশটিতে এটি দ্বিতীয় নির্বাচন ছিল। এতে এনএলডি ৪৭৬টির মধ্যে ৩৯৬টি আসনে জয় পায়। অন্যদিকে, সেনাসমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি পায় মাত্র ৩৩টি আসন। এই জয়ের মধ্য দিয়ে সু চির দল আরেক দফায় পাঁচ বছরের জন্য দেশ শাসনের সুযোগ পায়।
তবে ভোটের ফলাফল মেনে নেয়নি সামরিক বাহিনী। তারা সুপ্রিম কোর্টে দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং নির্বাচন কমিশনের প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। এরপর সোমবার সকালে সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে আটক করে অভ্যুত্থান ঘোষণা করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
সকাল থেকে জরুরি অবস্থা জারির পর রাজধানী নেপিদোতে মোবাইল ফোন ও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং রেডিওর প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন মায়াবতির সম্প্রচার চালু রয়েছে। নতুন মন্ত্রীদের নিয়োগের খবরও তারাই প্রচার করেছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলছে, এই সমস্যার সমাধান না হলে এটি গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে। আইন অনুযায়ী, এই সমস্যার অবশ্যই সমাধান করতে হবে। এ কারণে ২০০৮ সালের সংবিধানের ৪১৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। দেশের চলমান পরিস্থিতির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি থাকবে।