আল মাহমুদ কবিতায় দেশকে বুনে গেছেন: চট্টগ্রামে আল মাহমুদ স্মরণানুষ্ঠান
কবি আল মাহমুদ বাংলা কবিতায় বাংলাদেশের স্বাতন্ত্রিক বৈশিষ্ট্য রচনায় অনন্য ভূমিকা রেখে গেছেন। আধুনিক বাংলা কবিতার শহরমুখী প্রবণতার মধ্যেও ভাটি বাংলার জনজীবন, গ্রামীণ আবহ, নদীনির্ভর জনপদ, চরাঞ্চলের জীবনপ্রবাহ এবং নরনারীর চিরন্তন প্রেম-বিরহ ছন্দের অপূর্ব গাঁথুনীতে আল মাহমুদের কবিতায় যেভাবে এসেছে তা আমরা আর কারো কাছে পায়নি।
গতকাল সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) নগরীর থিয়েটার ইন্সটিটিউট চট্টগ্রামের গ্যালারি হলে ক্বণন শুদ্ধতম আবৃত্তি অঙ্গনের আয়োজনে বাংলা কবিতার প্রবাদ পুরুষ, কবি আল মাহমুদের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণানুষ্ঠানে অতিথি আলোচক হিসাবে বক্তারা এই কথাগুলো বলেন। ক্বণন সভাপতি আবৃত্তি শিল্পী মোসতাক খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে অতিথি আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট কবি ইকবাল করিম রিপন, কবি ও প্রাবন্ধিক মাঈন উদ্দিন জাহেদ এবং কবি সৈয়দ আহমদ শামীম।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্বণন কার্যকরী পরিষদ সদস্য আবৃত্তি শিল্পী সৌভিক চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ক্বণন সদস্য আবৃত্তি শিল্পী সাইমুম মুরতজা। অতিথি আলোচক বিশিষ্ট কবি ইকবাল করিম রিপন বলেন, মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত যে কবির কলম থামেনি তিনি আল মাহমুদ। পঞ্চাশের এই কবি পরবর্তী প্রতি দশকেই সাম্প্রতিক ছিলেন। ঘটনা বিস্তারী ও প্রেক্ষাপট বিচিত্রতায় আল মাহমুদের লেখনী ব্যাপক পাঠক-বোদ্ধাদের কাছে সমাদৃত হয়েছিল। তিনি বাংলাদেশের কবিতার প্রতিনিধিত্বশীল অন্যতম প্রধান কণ্ঠস্বর। কবিতায় কালের ইতিহাসকে ধারণ করেছেন তিনি। লোকজ শব্দ ও লৌকিক উপমায় আধুনিক কবিতার শরীরকে অলংকরণ করে মননশীল পাঠকদের হৃদয় জয় করেছেন কবি আল মাহমুদ।অতিথি আলোচক বিশিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক মাঈন উদ্দিন জাহেদ বলেন, বাংলা কবিতায় বাংলাদেশের স্বাতন্ত্রিক বৈশিষ্ট্য রচনায় আল মাহমুদ অনন্য ভূমিকা রেখে গেছেন। আল মাহমুদ কবিতার পাশাপাশি কথাসাহিত্যেও এ দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জীবন ও সংস্কৃতির স্বাতন্ত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো উজ্জ্বল করে তুলেছিলেন। তিনি বলেন, যারা আল মাহমুদের বিরোধিতা করেন তাদের এ বিরোধ রাজনৈতিক, শিল্পের নয়। আল মাহমুদের সমালোচনা যথার্থ একাডেমিক হওয়া উচিত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এরপরে ছিল আল মাহমুদের কবিতা নিয়ে একক আবৃত্তি পরিবেশনা। আবৃত্তি পরিবেশন করে আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ মোহাম্মদ, সৌভিক চৌধুরী, শরীফ মাহমুদ, মোহাম্মদ ওয়াসিম, আবসার তানিম, সাইমুম মুরতাজা, হৈমন্তী ধর, রুহুল্লাহ আকমল, মিজানুর রহমান, তমা দাশ, সূচনা দাশ, মুহতারিমা, শুভ্রা চক্রবর্তী, প্রেমা চৌধুরী, জুঁই বিশ্বাস, সুস্মিতা চৌধুরী, সাবিহা শশী, ইব্রহিম মাহমুদ, আবদুল মুনয়িম আসরা ও আকরাম আসিফ।