বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যা ও হতাহতের ঘটনায় বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার বিক্ষোভ কর্মসূচি
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম কোম্পানির কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র এসএস পাওয়ার প্লান্টের বকেয়া বেতন-ভাতাসহ ৪ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর বর্বরােচিত পুলিশি হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে আজ ১৮ এপ্রিল, ২০২১ রবিবার বিকাল ৫ টায় চেরাগি পাহাড় চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলা।
বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি রিপায়ন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি শ্যামল লােধ, সহকারী সাধারণ সম্পাদক জাবেদ চৌধুরী, রুপন কান্তি ধর, সাংগঠনিক সম্পাদক রাশিদুল সামির, টুটন দাশ, বিপ্লব দাশ, জুয়েল বড়ুয়া, মিঠুন বিশ্বাস, রবি শংকর সেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এসএস পাওয়ার লিমিটেড চীনের দুটি প্রতিষ্ঠানের কারিগরি সহযােগিতায় গন্ডামারা ইউনিয়নে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে শ্রমিক সরবরাহ করে তৃতীয় একটি কোম্পানি। এ কোম্পানী শ্রমিকদেরকে দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা নিয়ে অনিয়ম করছে।
গত শনিবার (১৭এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে বকেয়া বেতন পরিশােধ, বেতন বাড়ানাে, শুক্রবারে জুমার দিন হওয়ায় এক বেলা কাজ করা সহ ৪ দফা দাবিতে শ্রমিকরা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে গেলে তর্কাতর্কি হয়। সেসময় কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়। এ করােনা মহামারীর মধ্যেই আনােদলনরত শ্রমিকদের উপর পুলিশ শ্রমিকদের নিপীড়নে নেমে পড়ে। পুলিশের গুলিতে ৫ জন নিহত এবং ২৩ জন আহত হয়েছে। শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশের এই বর্বরােচিত হামলা কোনাে ভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
তারা বলেন, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও অন্যান্য পাওনাদি পরিশােধে গড়িমসি কোনােভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শ্রমিকরা শতভাগ ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছেন। অথচ বেতন-ভাতা পরিশােধ করার বদলে বিক্ষোভে গুলি করে শ্রমিকদের দাবি আদায়ের ন্যায্য অধিকারটুকু কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকদের হয়রানি – নির্যাতন করে মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
বক্তারা আরাে বলেন, অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান। শ্রমিকদের ওপর হামলা, হয়রানি বন্ধ ও সব শ্রমিকের বকেয়া বেতন অবিলম্বে পরিশােধ করারও দাবি জানান।
লুটেরা-ব্যবসায়ী শ্রেণির স্বার্থে পুলিশ বাহিনীকে দলীয় ক্যাডারের মতাে ব্যবহার করে জনগণের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং দেশকে একটি পুলিশি ভীতিকর রাষ্ট্রে পরিণত করে সরকার এটা প্রমাণ করেছে যে এ সরকার শ্রমিকবান্ধব নয়। গণবিচ্ছিন্ন, কর্তৃত্ববাদী অনৈতিক সরকার কখনাে শ্রমিকদের পক্ষে কোনাে দাবিকেই তােয়াক্কা করে না।