নারীর প্রতি সহিংসতা কমাতে মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি: প্রধানমন্ত্রী

0 191

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শুধুমাত্র আইনের মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা কমানো সম্ভব নয়, এক্ষেত্রে মানসিকতার পরিবর্তনটা অতি জরুরি। নারীরা ভোগের বস্তু নয়, নারীরা সহযোদ্ধা; এই মানসিকতা নিয়ে সমাজকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে।

তিনি বলেন, ‘নারীদের এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা আসবেই, তারপরও স্বনির্ভর হয়ে নারীদের এগিয়ে যেতে হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) ‘বেগম রোকেয়া পদক-২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

হয়েছে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম ধর্মে নারীদের সমান অধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।তারপরও আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের বাধা আসে। তবুও এগিয়ে যেতে হবে। একবার সামনে এগিয়ে যেতে পারলে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না।’

নারীদের জন্য সরকারের নানান উদ্যোগের চিত্র তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, নারীদের জন্য সরকারের নানান উদ্যোগের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নারীদের শিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে ৬০ ভাগ নারী নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে।

তিনি বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক করেছি, যেখানে নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ডিজিটাল সেন্টারগুলোতে নীতিমালা করা হয়েছে, যেন একজন নারী ও একজন পুরুষ উদ্যোক্তা সেখানে থাকেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পে যেসব পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়েছে, তাদের মাঝে যদি কখনো বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাহলে সেই ঘরের মালিকানা পাবে পরিবারের নারী সদস্য। এভাবেই নারীদের অগ্রগতিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বয়স্ক, বিধবা ভাতার পাশাপাশি প্রতিবন্ধী ভাতাও দিচ্ছি। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু, যারা শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই, সমাজের কেউ যেন অবহেলিত না থাকে। কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা নারী উন্নয়নে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় পাঁচজন বিশিষ্ট নারীর হাতে পদক তুলে দেন।

পদকপ্রাপ্তরা হলেন, নারী শিক্ষায় কুমিল্লার প্রফেসর হাসিনা জাকারিয়া বেলা, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য যশোরের অর্চনা বিশ্বাস, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখায় কুমিল্লার শামসুন্নাহার রহমান পরাণ (মরণোত্তর), সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ড. জিনাত হুদা এবং পল্লী উন্নয়নে কুষ্টিয়ার গবেষক ড. সারিয়া সুলতানা।

পদকপ্রাপ্তদের প্রত্যেকে রেপ্লিকাসহ ১৮ ক্যারেটের ২৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণপদক ও সম্মাননাপত্র পেয়েছেন। এছাড়া তাদের চার লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়।

উপমহাদেশে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছর ৯ ডিসেম্বর ‘বেগম রোকেয়া দিবস’ পালন করা হয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.