ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে লণ্ডভণ্ড ফিলিপাইন, নিহত অন্তত ১২
প্রবল ঘূর্ণিঝড় (টাইফুন) রাইয়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে দ্বীপরাষ্ট্র ফিলিপাইনের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চল।
দেশটির সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ঝড়ের কবলে পড়ে ফিলিপাইনের বিভিন্ন অঞ্চলে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১২ জনের।
গত বৃহস্পতিবার বয়ে যাওয়া এই ঝড়ের কবল থেকে বাঁচতে ইতোমধ্যে ৩ লাখেরও বেশি মানুষ বাড়িঘর ও সমুদ্রতীরবর্তী রিসোর্টগুলো ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।
ফিলিপাইনের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক রিকার্ডো জালাড এএফপিকে জানান, টাইফুনে মৃতদের সবাই দেশটির জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট বলে পরিচিত পালাওয়ান দ্বীপের। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিয়ারগাও, ভিসায়াস এবং মিন্দানাও দ্বীপও।
অবকাঠামোগত হিসেবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিয়ারগাও দ্বীপ। ফিলিপাইনের সংবাদমাধ্যম এবিএস-সিবিএনের প্রতিনিধি ডেনিস দাতু এএফপিকে বলেন, ‘সিয়ারগাও দ্বীপে কোনো ভবন অক্ষত অবস্থায় নেই। দ্বীপের প্রতিটি ভবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
‘শহরে বোমা পড়লে বা সামরিক আগ্রাসন শুরু হলে মানুষ যেমন হতভম্ব-উদভ্রান্ত হয়ে যায়, সিয়ারগাও দ্বীপের লোকজনের মানসিক অবস্থাও এখন তেমনি।’
দেশটির জাতীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সিয়ারগাও দ্বীপে আছড়ে পড়া রাই ছিল ‘সুপার টাইফুন’। ওই সময় ওই দ্বীপে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার (১২০ মাইল)। শুক্রবার সকালে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার।
এএফপিকে দাতু জানান, সিয়ারগাওসহ ফিলিপাইনের পুরো মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে প্রবল বর্ষণজনিত কারণে ভূমিধস, গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে চলাচলের অযোগ্য অবস্থায় আছে অধিকাংশ সড়ক। অসংখ্য বাড়িঘরের ছাদ-দরজা-জানালা উড়ে গেছে প্রবল ঝড়ো বাতাসে।
আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ফিলিপাইন শাখার প্রধান আলবার্তো বোকানেগ্রা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা যা দেখছি, তা একটি ধ্বংসযজ্ঞের খণ্ডচিত্র মাত্র। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুরো চিত্র আমাদের সামনে হাজির হবে এবং নিঃসন্দেহে সেটি অনেক ভয়াবহ।’
একই কথা বলেছেন ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলীয় দ্বীপপ্রদেশ বোহলের বাসিন্দা জোয়েল দারুনদেও (৩৭)। পেশায় ট্যুর অপারেটর দারুনদে এএফপিকে, ‘ক্ষয়ক্ষতি কী পরিমাণ হয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো অবস্থা আমাদের কারোরই নেই। আমি শুধু বলতে পারি, গত ৩০ বছরে এত বড় ও বিধ্বংসী টাইফুন আমরা দেখিনি।’