ওসি প্রদীপের ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে মানববন্ধন

0 368

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে সোমবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে।

এই মামলার প্রধান আসামি কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার আদালত চত্বরে মানববন্ধন করে ফাঁসির জানান তারা।

টেকনাফের সর্বস্তরের জনসাধারণের উদ্যোগে আয়োজিত এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের অভিযোগ, প্রদীপ কুমার দাশ টেকনাফ থানার ওসি থাকাকালে নিরীহ লোকজনকে হয়রানি ও নির্যাতন করেছেন। ক্রসফায়ার দিয়েছেন ১৪৫ জন নিরীহ মানুষকে। প্রদীপ কুমার দাশের ফাঁসি দাবি করেন উপস্থিত জনতা।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।

আসামিদের নির্দোষ দাবি

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় ঘোষণা ঘিরে আদালতে উপস্থিত রয়েছেন আসামিদের স্বজনরা। তারা রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করছেন।

তারা অভিযোগ করে বলেন, আসামিরা নির্দোষ। স্বজনদের দাবি, সিনহা হত্যা মামলাকে মিডিয়া ট্রায়াল করেছে গণমাধ্যমকর্মীরা। তারা সব আসামিকে ঢালাওভাবে দোষী বানিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছে। মূলত ওসি প্রদীপের কারণে তাদেরও ফাঁসানো হয়েছে।

সিনহা হত্যায় মামলা চারটি

সিনহা হত্যার ঘটনায় মোট চারটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পরপরই পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়, একটি রামু থানায়। তিনটি মামলার দুটি মাদক রাখার অভিযোগে এবং একটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে।

এ ঘটনায় হত্যা মামলাটি করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। ওই বছরের ৫ আগস্ট আদালতে করা ওই মামলায় তিনি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের নয় সদস্যকে আসামি করেন।

চারটি মামলারই তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব। পরে র‌্যাব এ ঘটনায় প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের ১১ জন পুলিশ সদস্য ও ৩ জন গ্রামবাসী। পুলিশের করা তিনটি মামলার তদন্তে উত্থাপিত অভিযোগের কোনো সত্যতা না পাওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে র‌্যাব। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, ওসি প্রদীপ কুমার দাশের পূর্বপরিকল্পনায় আসামিরা মেজর (অব.) সিনহাকে গুলি করে হত্যা করেন।

গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে আসামি করে কক্সবাজার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় র‍্যাব। গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন । তবে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এর আগে আসামিদের তিন দফায় ১২ থেকে ১৫ দিন রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।

গত বছরের ২৭ জুন প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়।

অভিযোগপত্রে থাকা ৮৩ সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। গত ১২ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.