চট্টগ্রামের হকার্স মার্কেটে আগুনে পুড়ল ২৫ দোকান

0 231

চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার হকার্স মার্কেটে আগুন লেগেছে।  গত শুক্রবার (১১ মার্চ) রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মোবিলাইজিং অফিসার মো. কফিল উদ্দিন। তিনি বলেন, হর্কাস মার্কেটে আগুনের সংবাদ আমরা পাই রাত সাড়ে নয়টার দিকে। পরে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি স্টেশনের ৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায় এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় এই আগুনের সূত্রপাত হয়। মার্কেটে মাঝামাঝি এলাকায় মসজিদের একটি দোতলা ভবন থেকে আগুন লাগার খবর পেয়ে পরে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিটের ১২টি গাড়ি দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

‘ঈদের বাজারের জন্য ধার দেনা করে দশ লাখ টাকার কাপড় তুলেছিলাম। কিন্তু এখন একটি কাপড়ও রইল না। সবগুলোই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলেন নগরীর জহুর হকার্স মার্কেটে আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানের মালিক মো. জুনায়েদ। বলেন, এখন কীভাবে দেনা পরিশোধ করবো। আমার সব শেষ।

তার পাশের দোকানদার মো. হাসান মাহমুদ। তিনিও অগ্রিম সাড়ে ৬ লাখ টাকার পোশাক ক্রয় করেন ঈদের বাজার ধরতে। কিন্তু একটি কাপড়ও দোকানে পাননি হাসান। জুনায়েদের মতো তারও সবগুলো কাপড় পুড়ে ছাই হয়েছে আগুনে।

জুনায়েদ ও হাসানের দোকানের মতো নগরীর জহুর হকার্স মার্কেটের প্রায় ২৫টি দোকান আগুনে পুড়েছে।

জানা যায়, এসব দোকানে নারী ও শিশুদের বিভিন্ন ধরণের তৈরি পোশাক বিক্রি করা হয়। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগুনে তাদের কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা আছে। আর ফায়ার সার্ভিস থেকে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ ও সূত্রপাত সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করা না হলেও, তদন্ত করে পরবর্তীতে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হওয়ায় আগুন লাগার সময় মার্কেট বন্ধ ছিল। তাছাড়া আগুন দ্রুত নেভানো সম্ভব হওয়ায় খুব বেশি দোকানে তা ছড়াতে পারেনি। তবে উৎসুক জনতার উপচে পড়া ভিড়ের কারণে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের কাজ করতে বেগ পেতে হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক আনিছুর রহমান জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন লাগার খবর পাই। চারটি ইউনিটের ১২টি গাড়ি দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখানে চ্যালেঞ্জ ছিল পানির। পাশের লালদিঘি থেকে পানি এনে কাজ করা হয়েছে। রাত ১১টার দিকে আগুন আমাদের নিয়ন্ত্রণে আসে। মার্কেটে ৯শ দোকান রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি দোকান পুড়েছে বলে ধারণা। তবে আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত করে বলা যাবে।

এদিকে নগরীর সবেচেয়ে বড় হকার্স মার্কেটে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের দক্ষতায় খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তা না হলে আরও বড় ক্ষয়ক্ষতি হতে পারত। আগুনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেয়া হবে।

অন্যদিকে, পুড়ে যাওয়া সাতকানিয়া ফ্যাশনের মালিক জুনায়েদ অভিযোগ করে বলেন, কয়েকদিন পরপরই বৈদ্যুতিক সমস্যা হয়ে থাকে। ২০-৩০ টাকা করে তুলে ঠিক করা হয়। কিন্তু কোন সমাধান হয় না। এটাও বৈদ্যুতিক সমস্যা থেকে হয়েছে বলে ধারণা। ছাই ছাড়া কিছুই নেই কোন দোকানে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.