চবিতে ১৭ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ ১৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
অনলাইন ডেস্ক:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পাঁচটি আলাদা ঘটনায় ১৭ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্য আরেকটি ঘটনায় ছাত্র অধিকার পরিষদের এক কর্মীকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, মারামারি ও সাংবাদিক হেনস্তাসহ বিভিন্ন ঘটনায় ছয়টি সিদ্ধান্তে মোট ১৮ জনের বহিষ্কার আদেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স এবং হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন সভা। গত সোমবার এক অনলাইন প্লাটফর্ম জুম মিটিংয়ে এইসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে লিখিত আদেশ তৈরি করে এ তথ্য জানায় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য সচিব রবিউল হাসান ভূঁইয়া সমকালকে বলেন, ‘সোমবার রাত আটটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত এই সভা চলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতারও সভায় ছিলেন। সবগুলো ঘটনা ভালোভাবে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
বহিষ্কৃত ১৮ শিক্ষার্থীর ১৭ জনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপের নেতা-কর্মী। একজন ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্য।
যেসব কারণে ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকর্মী বহিষ্কার:
গত ১১ আগস্ট ছাত্রীদের বেগম খালেদা জিয়া হলের শাখা ছাত্রলীগের চার নেত্রীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উপ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক তাসফিয়া জান্নাত নোলককে দেড় বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাসফিয়া জান্নাত নোলক ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের না যাওয়া সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। বহিষ্কার হওয়া এ দুই কর্মী হলেন- লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের আরশিল আজিম এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শোয়েব মোহাম্মদ আতিক।
গত ৮ অক্টোবর আলাওল হলের কক্ষ ভাঙচুর ও প্রাধ্যক্ষকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ দুই কর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তারা হলেন- সমাজতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হাছান মাহমুদ আর শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শহিদুল ইসলাম।
গত ২ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও রাম দা উচিয়ে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় ৬ ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তারা হলেন- সংস্কৃত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের অনিক দাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তনয় কান্তি শিকদার, অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের লাবিব সাঈদ, ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সিফাতুল ইসলাম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নাহিদুল ইসলাম, একই বর্ষের ইতিহাস বিভাগের মো. মোবারক হোসেন। এ ছাড়া ২৪ আগস্ট শাটল ট্রেনে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে কর্তৃপক্ষের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় আটক হওয়া ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী জোবায়ের হোসেনকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।
সর্বশেষ গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি পরপর দুদিন রাতে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল শাখা ছাত্রলীগের দুটি উপপক্ষ। এতে উভয় পক্ষের ১১ নেতা আহত হন। এ ছাড়া আহত হয়েছিলেন সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম। এ দুইদিনের ঘটনায় ছাত্রলীগের ছয় নেতা কর্মীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। বহিষ্কার হওয়া নেতা কর্মীরা হলেন- ফাইনান্স বিভাগের স্নাতকোত্তের আমিরুল হক চৌধুরী, ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের ইকরামুল হক ও দর্শন বিভাগের একই বর্ষের নয়ন দেবনাথ। বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সাখাওয়াত হোসেন, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মাহমুদুল হাসান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মোহাম্মদ ফাহিম।