বিএনপির আন্দোলন কখনও আলোর মুখ দেখবে না : নানক
অনলাইন ডেস্ক:
বিএনপিসহ সরকারবিরোধীরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যে আন্দোলন করছে, তা কখনোই আলোর মুখ দেখবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দিনগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগ আয়োজিত সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন নানক।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “সরকারবিরোধীরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করে। তাদের আন্দোলন কেমন? তারা বলে এই ঈদের পরে আন্দোলন। আবার বলে এই ঈদ নয়, সামনের ঈদ, এই শীত না সামনের শীত, এই বর্ষা না সামনের বর্ষা। এই আন্দোলন কখনও আলোর মুখ দেখেনি, দেখবেও না।”
দেশে আইন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে মন্তব্য করায় বিএনপিনেতাদের সমালোচনা করে নানক বলেন, “আজকে বিএনপিনেতারা বলে দেশে নাকি আইনের শাসন নাই, বিচার বিভাগের কাঁধে নাকি আমরা বন্ধুক রেখে দেশ পরিচালনা করি। তাদের এসব বক্তব্যের ধিক্কার দেই। মির্জা ফখরুল সাহেব কীসের জবাব দেবেন? আপনাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান একদিকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক, অন্যদিকে সেনাবাহিনীর প্রধান, আরেক দিকে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেছিল। এই দল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি চিরদিনের জন্য বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল পাকাপোক্ত করতে চেয়েছিল। সেজন্য বিমানবাহিনীর সাড়ে ছয় হাজার কর্মকর্তাকে হত্যা করেছিল। সেই জিয়ার দলের নেতারা বলে আইনের শাসন নাই।”
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “ফখরুল সাহেব আপনি জবাব দিন—কারা ২১ আগস্টের হামলা পরিচালনা করেছিল? সেদিন আপনাদের সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের জাতীয় পর্যায়ে নেতাদের হত্যা করার জন্যই গ্রেনেড হামলা করেছিলেন। সারের দাবিতে আন্দোলন করায় কৃষকের ওপর গুলি চালিয়ে পাখির মতো হত্যা করেছিল, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাত কেটেছেন, পা কেটে দিয়েছিল, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্মমভাবে নির্যাতন করেছেন। নৌকায় ভোট দেওয়ার অভিযোগ বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করেছে। নির্বাচন প্রতিহত করার নামে ২০১৩-১৪ সালে বাসে আগুন লাগিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। অথচ আজকে আপনারা আইনের শাসন নাই বলে কথা বলেন। তারা (বিএনপি) আজ আমাদের আইনের শাসন শিখায়, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শিখায়, গণতন্ত্র শিখায়।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিরোধীদের আন্দোলনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এ প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, “আজকে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে বাঙালি জাতির তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই ব্যবস্থাকে বাতিল করে দিয়েছেন।”
সাবেক ছাত্রলীগনেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার দায়িত্ব নিয়েছিল ছাত্রলীগ। এই সংগঠন শত প্রতিকূলতার মাঝেও আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তুলেছে। ছয় দফা থেকে শুরু করে সব আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রলীগের ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ। তাই যত ষড়যন্ত্র হোক, এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।”
বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সভাপতি সজীবুর রহমান সজীবের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান মোল্লা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর শরিফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।