বিএম ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের এক বছর আজ
অনলাইন ডেস্ক:
গত বছরের ৪ জুন রাতে স্মরণকালের ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে। যেখানে ১৩ দমকল কর্মীসহ প্রাণ হারান ৫১ জন। আহত তিন শতাধিক।
সেদিনের বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিলো আশ পাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা। সব বাহিনী মিলে সর্বশক্তি নিয়োজিত করার পরও আগুন নেভাতে লেগেছিল ৮৬ ঘণ্টা। দুঃসহ সে স্মৃতি এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন আহতরা।
ভয়াবহ সেই বিস্ফোরণে আহতদের একজন জানান, বিস্ফোরণের পরে দশ-পনেরো মিনিট কোন হুশ ছিলো না। হুশ আসার পর দেখি শুধু রক্ত আর লাশ, সেই সঙ্গে মানুষের আহাজারি।
দুর্ঘটনার পর একাধিক সংস্থার তদন্তে বেরিয়ে আসে বিএম ডিপোর নিরাপত্তা ঘাটতিসহ নানা গাফিলতির চিত্র। তাতে বিপুল ক্ষতির কারণে কয়েকমাস বন্ধ ছিল ডিপোটি। এরপর ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার সুপারিশে ঢেলে সাজিয়ে আবারও চালু হয়েছে বিএম ডিপো।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল হালিম বলেন, বিএম ডিপোতে ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম এখন অনেক ভালো ও উন্নত। এটা আগে ছিলো না।
তবে বিএম ডিপো কিছুটা বদলালেও বদলায়নি অন্যান্য শিল্প কারখানার চিত্র। হয়নি তদারকিও। যার প্রমাণ, কয়েক মাস পরেই সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণসহ কয়েকটি বড় দুর্ঘটনা ঘটে সীতাকুণ্ডে। ঘটে প্রাণহানি। বিশেষজ্ঞদের মতে, কেউই শিক্ষা নেয়নি বিএম ডিপো দুর্ঘটনা থেকে।
অগ্নিনিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সাব্বির হোসেন বলেন, কিছু কিছু অফিস আদালত বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থেকে অনুমতি নিচ্ছে ঠিকই কিন্তু তা ১০০ ভাগের এক ভাগও তারা বাস্তবায়ন করছে না।
এ বিষয়ে চুয়েটের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম সায়েম বলেন, সবাইকে অবশ্যই ভাবতে হবে যে আমরা বিএম ডিপোর মত দুর্ঘটনা আর চাই না।
তবে শিল্প কারখানাগুলোতে এখন তদারকি বাড়ানোর কথা বলছে প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিব হাসান বলেন, তাদের সুরক্ষা কিভাবে নিশ্চিত করা যায় আমরা সেগুলো অনুযায়ী তাদেরকে একটা গাইডলাইন দিয়েছি। ভবিষ্যতে যেন এমন দুর্ঘটনা না হয় সেটার জন্যে আমরা সচেতনতামূলক বাইরে থেকে দক্ষ লোক এনে কর্মশালার ব্যবস্থা করেছি।
বিএম ডিপো বিস্ফোরণের ঘটনায় একটি মামলা হলেও পুলিশ কারও কোন দায় না পাওয়ার অজুহাতে সম্প্রতি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় আদালতে। ফলে চাপা পড়ে গেছে, মালিকপক্ষের গাফিলতির বিচারের সুযোগও।