স্যামসাং মোবাইল এর নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী কারা?
স্মার্ট ফোনের বিশেষত্ব হলো এর অপারেটিং সিস্টেম। যেখানে এপল সর্ব প্রথম তাদের আইওএস নিয়ে অত্যাধুনিক স্মার্টফোন নিয়ে এসেছিল। পাশাপাশি ব্ল্যাকবেরী এবং মাইক্রোসফ্ট ও স্মার্টফোনের জন্য আলাদা ওএস (অপারেটিং সিস্টেম) নিয়ে এসেছে। কিন্তু এসব গুলোই তাদের নিজস্ব সম্পত্তি। তাই তাদের বিশেষ ডিভাইস ছাড়া অন্য কোন কোম্পানির পক্ষে সম্ভব ছিলনা এমন ওএস (অপারেটিং সিস্টেম) ব্যবহার করে স্মার্টফোন তৈরি করা। কিন্তু গুগুল যখন তাদের এনড্রয়েড ওএস (অপারেটিং সিস্টেম) উন্মুক্ত করে দিল তখন নামি দামী কোম্পানী গুলোর পাশাপাশি অনেক নতুন নির্মাতা স্মার্টফোন নির্মানে যুক্ত হলো এনড্রয়েড ওএস ব্যবহার করে। আর প্রতিনিয়তই তাই চ্যালেন্জ এর মুখোমুখি হতে হচ্ছে বড় বড় নির্মাতাদের।
বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে ভালোই আধিপত্য বিস্তার করে আছে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। তবে এ রাজত্ব আর বেশি দিন থাকছে না। ২০১৮ সালের মধ্যেই স্মার্টফোন বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব হারাতে পারে। চীনভিত্তিক স্মার্টফোন নির্মাতাদের উত্থান স্যামসাংয়ের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকস প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।
স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকসের তথ্য মতে, আগামী বছর বৈশ্বিক হাই অ্যান্ড স্মার্টফোন ডিভাইস বাজারে উপস্থিতি বাড়াতে কাজ করছে অ্যাপল। অন্য দিকে চীনা ব্র্যান্ডগুলো বাজেটসাশ্রয়ী ডিভাইস দিয়ে উদীয়মান বাজারগুলোয় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছে। মজার ব্যাপার হলো বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে আইওএস চালিত ডিভাইসের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। কাজেই হাই অ্যান্ড স্মার্টফোন বাজারে ব্যবসা জোরদারে অ্যাপলকে খুব বেশি বেগ পেতে হয় না। আর এই বাজারটিতে অ্যান্ড্রয়েড চালিত ডিভাইস দিয়ে আধিপত্য ধরে রেখেছে স্যামসাং। সমস্যা হলো, চীনা ব্র্যান্ডগুলো অ্যান্ড্রয়েড চালিত ডিভাইস দিয়ে ব্যবসা জোরদার করছে। এ ক্ষেত্রে আগামী বছর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হতে হবে স্যামসাংকে। চলতি বছর প্রথমবারের মতো বার্ষিক স্মার্টফোন সরবরাহে ঘাটতির সম্মুখীন হয় স্যামসাং। গত বছর গ্যালাক্সি নোট ৭ স্মার্টফোন নিয়ে বিপত্তিতে পড়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। ডিভাইসটির ব্যাটারি বিস্ফোরিত হয়ে একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। গ্রাহক নিরাপত্তার স্বার্থে স্থায়ীভাবে এটির উৎপাদন বন্ধ করতে হয়েছিল। ২০১৭ সালজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির ডিভাইস ব্যবসায় ওই ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে অ্যাপলের দখল ১৪ শতাংশ ছাড়াবে। আগামী বছর প্রতিষ্ঠানটির বাজার দখল ১৪ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছবে এবং ডিভাইস সরবরাহ পৌঁছবে ২৩ কোটি ৪০ লাখ ইউনিটে। বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে চীনা ব্র্যান্ডগুলোর আধিপত্য ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। বাজার দখলে এসব ব্র্যান্ড স্যামসাং ও অ্যাপলের সমকক্ষ হয়ে উঠছে। বর্তমানে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে চীনা ব্র্যান্ডগুলোর দখল দাঁড়িয়েছে ৪৮ শতাংশ। আগামী বছর চীনভিত্তিক হুয়াওয়ে টেকনোলজিস এবং অপো ইলেকট্রনিকস করপোরেশনের বাজার দখল বেড়ে যথাক্রমে ১০ এবং ৭ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছবে।