কিভাবে পাবেন বিনামূল্যে আইনি সেবা?

0 228

how to get free legal aid

আইনগত সহায়তা হল আর্থিকভাবে অসচ্ছল,সহায় সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারনে বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে অসমর্থ বিচারপ্রার্থী সহায়তা করা। আইনের দৃষ্টিতে দেশের সব নাগরিক ই সমান। প্রত্যেকেই ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকারী। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ নং অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিককে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের দরিদ্র বিচার প্রার্থীরা অনেক সময় টাকা-পয়সার অভাবে মামলা পরিচালনা করতে পারেনা। অনেক ভোগান্তির শিকার হয়। বঞ্চিত হয় নিজেদের অধিকার থেকে। আর এসকল দরিদ্রদের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ সরকার ২০০০ সালে কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপ মেন্ট এজেন্সির সহযোগিতায় দরিদ্র বিচারপ্রার্থীদের “আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০” পাস করে। সারা দেশের বেশিরভাগ মানুষের এ বিষয়ে পুরোপুরি ধারণা না থাকায় তারা বিনামূল্যে আইনি সহায়তা নিতে পারছেন না। কিন্তু তাদের সচেতন করে বা জানিয়ে দিলে তারা আশা করি এ সেবা পাবে।

কারা পাবে আইনগত সহযোগিতাঃ-

  • আর্থিকভাবে অসচ্ছল যে কোন ব্যাক্তি যাহার বার্ষিক গড় আয় ৫০,০০০(পঞ্চাশ হাজার টাকাড় ঊর্ধ্বে নয়;
  • কর্মক্ষম নয়, আংশিক কর্মক্ষম, কর্মহীন বা বার্ষিক ৭৫,০০০ টাকার ঊর্ধ্বে আয় করিতে অক্ষম এমন মুক্তিযোদ্ধা;
  • বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন এমন কোন ব্যাক্তি;
  • ভি জি ডি কার্ড ধারী দুঃস্থ মাতা;
  • পাচারের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ নারী বা শিশু;
  • দুর্বৃত্ত দ্বারা এসিড দগ্ধ নারী বা শিশু;
  • আর্দশ গ্রামে গৃহ বা ভূমি বরাদ্দ প্রাপক কোন ব্যাক্তি;
  • অসচ্ছল বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা এবং দুঃস্থ মহিলা;
  • উপার্জনে অক্ষম এবং সহায় সম্বলহীন প্রতিবন্ধী;
  • আর্থিক অসচ্ছলতার দরম্নন আদালতে অধিকার প্রতিষ্ঠা বা আত্মপক্ষ সমর্থন করিতে অসমর্থ ব্যক্তি;
  • বিনা বিচারে আটক এমন ব্যক্তি যিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে আর্থিকভাবে অসচ্ছল;
  • আদালত কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অসচ্ছল বলিয়া বিবেচিত ব্যক্তি;
  • জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অসচ্ছল বলিয়া সুপারিশকৃত বা বিবেচিত কোন ব্যক্তি;

কি কি ধরণের আইনি সেবা প্রদান করা হয়ঃ-

  • আইনগত পরামর্শ প্রদান;
  • মামলা দায়ের ও পরিচালনা;
  • কাউন্সেলিং
  • মামলা সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক খরচ প্রদান;
  • আপোষ মিমংসার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি;

কোন কোন মামলায় আইনগত সহযোগিতা প্রদান করা হয়ঃ-

 ফৌজদারী মামলাঃ-

  • স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে স্বামীর বিয়ে
  • শারীরিক নির্যাতন
  • যৌতুক দাবী বা যৌতুকের জন্য নির্যাতন
  • এসিড নিক্ষেপ
  • পাচার
  • অপহরণ
  • ধর্ষণ
  • আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তৃক আটক বা গ্রেপ্তার

দেওয়ানী মামলাঃ-

  • সন্তানের অভিবাবকত্ব
  • ভরণপোষণ ও দেন মোহর আদায়
  • বিবাহ বিচ্ছেদ
  • সম্পত্তি দখল পুনরুদ্ধার
  • দলিল বাতিল
  • স্থায়ী নিষেদ্ধাজ্ঞা
  • সম্পত্তির বন্টন বা বাটোয়ারা
  • ঘোষনামূলক মামলা
  • চুক্তি সংক্রান্ত মামলা
  • ধর্ষণ ও এসিড নিক্ষেপের মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে থানা যদি এজহার বা মামলা গ্রহণ ন করে সে ক্ষেত্রেও সরকারী আইন গত সহায়তার জন্য আবেদন করা যায়।
  • এছাড়া পূর্বে দায়ের করেছেন কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ব্যক্তিগত আইনজীবির মাধ্যমে আর মামলা চালিয়ে যেতে পারছেনা, এ ধরণের মামলার ক্ষেত্রেও যে কেউ আইন গত সহায়তা পেতে পারেন।
  • কোন অসহায় নারী বা শিশু যদি বিনা বিউচারে কারাগারে বা হাজতে আটক তাহকে তবে তিনি জেল কর্তৃ পক্ষের মাধ্যমে সরকারী আইন গত সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারে।
  • কোন শিশু যদি কিশোর বা কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে বিনা বিচারে আটক থাকে তবে প্রবেশন অফি সার বা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে সরকারি লিগ্যাল এইড অফিসে আবেদন করতে পারেন।
  • আপোষ মিমংসার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি ।

যেখানে আবেদন করতে হবেঃ-

  • বিরোধের বিষয়টি জজ কোর্ট বা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে বিচার্য হলে জেলা কমিটির চেয়ারম্যান তথা জেলা ও দায়রা জজ বরাবর আবেদন করতে হবে।
  • বিরোধের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের কোন বিভাগে বিচার্য হলে চেয়ারম্যান জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা বরাবর আবেদন করতে হবে।

 আবেদন ফরম কোথায় পাওয়া যায়ঃ-

  • জেলা লিগ্যাল এইড অফিস, সকল জেলা জজ আদালত ভবন।
  • জেলখানা বা জেল সুপারের কার্যালয়।
  • উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়
  • ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়
  • জাতীয় মহিলা সংস্কার জেলা ও উপজেলা অফিস
  • জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কার্যালয়
  • সংস্থার ওয়েবসাইট (nlaso.gov.bd)

 

 

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.