সোনালী কাবিন’র কবি আল মাহমুদের দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী আজ

0 245

আজ বাংলা সাহিত্যের সোনালী কাবিন’র কবি নামে খ্যাত আল মাহমুদের দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী। বাংলা সাহিত্য়ের প্রধান এই কবি ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির এই দিনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পাড়ি জমান লোক লোকান্তরে। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিলো ৮২ বছর।

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের উজ্জল নক্ষত্রের নাম আল মাহমুদ। বাংলা কবিতাকে নতুন চেতনা ও ভাব-ভঙ্গিমায় সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সাহিত্যের বরেণ্য এই কবি। বর্ণাঢ্য এই জীবনের শতবর্ষে পৌঁছাতে বাকি ছিলো সতেরোটি বছর। এর আগেই থেমে গেলো কালের কলস। সাহিত্যে স্মরণীয় হয়ে চলে গেলেন সোনালি কাবিনের কবি । আল মাহমুদ ছিলেন একটি অধ্যায়, চলন্ত ইতিহাস ও বাংলার জীবন্ত সাহিত্য কোষ।

বাংলা সাহিত্যে অনবদ্য কালজয়ী কাব্য সোনালী কাবিন এর স্রষ্টা ও বাংলা ভাষার গুরুত্বপূর্ণ কিংবদন্তি কবি ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোড়াইল গ্রামের এক ব্যবসায়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বেড়ে উঠেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। পরবর্তীতে কবিতা ও জীবিকার টানে আজীবন থেকেছেন রাজধানী ঢাকায়।

অভিন্ন দৃষ্টিতে জীবনকে দেখেছেন কবিতার ভেতর। আর কবিতাকে করে তুলেছেন জীবনের ভাষ্য। কবিতার পাশাপাশি গল্পকে সঙ্গী করে হেঁটেছেন দীর্ঘপথ। এর পরেই শুরু হয়েছে উপন্যাসের প্রবাহ। উপন্যাসেও ছিলো গ্রামীণ জীবন আর বৈচিত্রের সম্ভার।

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের এই কবি গ্রামীণ পথে হেঁটেছেন ভাটি বাংলার জনজীবন আর তিতাসের আবহ নিয়ে চরাঞ্চলের জনপদ, নর ও নারীর প্রেম-বিরহকে করেছেন তার কবিতা, গল্প-উপন্যাসের একমাত্র উপজীব্য। আধুনিক বাংলা ভাষার প্রচলিত রিতির বাহিরে এসে স্বাচ্ছন্দ্যে করে গেছেন আঞ্চলিক শব্দের প্রয়োগ।

কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ভ্রমণ কাহিনী, আত্মজীবনীসহ পদচারণায় মুখোরিত করেছেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের এই অঙ্গনকে।কবির উল্লেখযোগ্য সাহিত্য সম্ভারে রয়েছে- সোনালী কাবিন, লোক লোকান্তর, কালের কলস, মায়াবী পর্দা দুলে উঠো, বখতিয়ারের ঘোড়া, একচক্ষু হরিণ, উড়ালকাব্য। কাবিলের বোন, উপমহাদেশ, ডাহুকি, আগুনের মেয়ে, পানকৌড়ির রক্ত, ত্রিশিরা ও দিনযাপন ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। এছাড়াও জীবনের গল্প বলতে লিখেছেন, কবির মুখ ও যেভাবে বেড়ে উঠি নামে আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ।

কলম ও কালির সখ্যতায় কবিতার পঙতিমিলা বা উপন্যাসের বিষয় বৈচিত্র ছুঁয়ে গেছে পাঠকের হৃদয়।সাহিত্যকর্মে স্বীকৃতি মিলেছে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, শিশু একাডেমি (অগ্রণী ব্যাংক) পুরস্কার, নাছির উদ্দিন স্বর্ণ পদক, কলকাতার ভানু সিংহ পদকসহ নানান সম্মাননা।

লেখক- মিজান ফারাবী, কবি ও প্রাবন্ধিক।

Leave A Reply

Your email address will not be published.