ছোলা-ডালের গুণাগুণ ও নানান উপকারীতা
প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১০ মিলিগ্রাম, ও ভিটামিন এ ১৯০ মাইক্রোগ্রাম। এ ছাড়াও আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম। এ সবই শরীরের জন্য কাজে লাগে। ছোলায় খাদ্য-আঁশও আছে বেশ। এ আঁশ কোষ্ঠ কাঠিন্যে উপকারী। খাবারের আঁশ হজম হয় না।
একইভাবে খাদ্যনালী অতিক্রম করতে থাকে। তাই মলের পরিমাণ বাড়ে এবং মল নরম থাকে। এতে কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর হয়। মলত্যাগ করা সহজ হয়। নিয়মিত মলত্যাগ হয়ে যায় বলে ক্ষতিকর জীবাণু খাদ্যনালীতে থাকতে পারে না। ফলে খাদ্যনালীর ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা কমে।
ডালের আছে নানা রকম। সেসব ডালের স্বাদও আলাদা। যেমন মসুর ডাল এবং ছোলার ডালের স্বাদ কিন্তু এক নয়। স্বাদের মতোই এর পুষ্টিমানও কম-বেশি হয়ে থাকে। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কোন পাঁচ ডাল বেশি ভালো। এসব ডাল নিয়মিত খেলে পাবেন বেশি উপকার।
এছাড়াও ছোলায় বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন, খনিজ লবণ, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে আরও অনেক উপকার। উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার ছোলা। কাঁচা, সেদ্ধ বা তরকারি রান্না করেও খাওয়া যায়। কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে, খোসা ছাড়িয়ে, কাঁচা আদার সঙ্গে খেলে শরীরে একই সঙ্গে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিক যাবে। আমিষ মানুষকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান বানায়।
ডাল হিসেবে ছোলা পুষ্টিকর একটি ডাল। এটি মলিবেডনাম এবং ম্যাঙ্গানিজ এর চমৎকার উৎস। ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে ফলেট এবং খাদ্য আঁশ আছে সেই সাথে আছে আমিষ, ট্রিপট্যোফান, কপার, ফসফরাস এবং আয়রণ। রক্তে কোলেস্টেলের সমস্যায় ভুগলে মসুর ডালের বদলে খেতে পারেন ছোলার ডাল। এই ডাল আমাদের শরীরের জমে থাকা অতিরিক্ত টক্সিন দূর করে। এতে আছে ভিটামিন এ, সি এবং ই, ফাইবার, প্রোটিন ও প্রয়োজনীয় খনিজ। নিয়মিত ছোলার ডাল খেলে হৃদপিণ্ড, হাড়, মস্তিষ্ক ইত্যাদি সুস্থ থাকে এবং ক্যান্সারও দূরে থাকে।
কাঁচা ছোলা কাঁচা ছোলা আরও বেশি উপকারী। কাঁচা ছোলা সারারাত ভিজিয়ে রেখে সালাদে কিংবা স্প্রাউট হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। নিয়মিত কাঁচা ছোলা খেলে তা পেশী গঠনে ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি দূরে রাখে ক্লান্তিও।
ডাল দক্ষিণ ভারতীয় জনপ্রিয় খাবার এই ডাল। এতে আছে প্রোটিন, ডায়েটারি ফাইবার, শর্করা, ভিটামিন এবং খনিজ। রাজমায় পর্যাপ্ত ফাইবার থাকায় এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এই ডাল উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। রাজমা ডাল নিয়মিত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে কমে ডায়াবেটিসের ভয়। অনেকটা কিডনির মতো দেখতে এই ডাল ভালো রাখে কিডনিও।
মটরশুঁটি এই ডাল দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও তেমন সুস্বাদু। এটি মাছ-মাংস, শাক-সবজি, পোলাও কিংবা বিরিয়ানিতে ব্যবহার করা যায়। আবার সেদ্ধ বা ভাজা মটরশুঁটিও খেতে বেশ ভালো। এই ডালে আছে প্রচুর প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার। এসব উপাদান হজমের জন্য বেশ সহায়ক। এটি প্রোটিনের বেশ ভালো একটি উৎস।
খাদ্যের আঁশ রক্তের চর্বি কমাতেও সহায়ক। আরও নানান শারীরিক উপকারিতা আছে খাদ্য-আঁশে। দেরীতে হজম হয়, এরূপ একটি খাবার হচ্ছে ছোলা। ছোলা দীর্ঘক্ষণ ধরে শরীরে শক্তি যোগান দিতে সক্ষম। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলা থেকে প্রায় ৩৬০ ক্যালরিরও বেশি শক্তি পাওয়া যায়। ছোলা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।